চট্টগ্রামে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। বিশেষ করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম রিপাবলিক ওয়ার্ল্ড এবং অপ ইন্ডিয়ার মতো প্ল্যাটফর্মগুলো তাকে ইসকনের সাবেক নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী হিসেবে উল্লেখ করে দাবি করেছে, তিনি পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন।
তবে বাস্তবতা হলো, সাইফুল ইসলাম আলিফ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী ছিলেন না। তিনি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। বিভিন্ন বিশ্বাসযোগ্য সূত্রের তথ্যমতে, তাকে ইসকনের সদস্যরা কুপিয়ে হত্যা করেছে।
বাংলা ট্রিবিউন ও চ্যানেল ২৪-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাইফুল ইসলাম চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার জালাল উদ্দিনের ছেলে। তিনি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৮ সালে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যপদ লাভ করেন এবং পরবর্তীতে হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবেও নিবন্ধন পান।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় আটজন আহত হয়ে হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে সাইফুল ইসলামকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তার শরীরে কোপের আঘাতের চিহ্ন ছিল।
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী ছিলেন শুভাশীষ শর্মা। এছাড়া চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরীর বরাতে জানা যায়, বিক্ষোভকারীরা সাইফুল ইসলামকে আদালতের নিচতলা থেকে ধরে নিয়ে যায় এবং পাশের গলিতে কুপিয়ে হত্যা করে।
গত সোমবার (২৫ নভেম্বর) জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। তাকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়ার পর মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। জামিন না মঞ্জুর হলে আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ শুরু হয়। এই বিক্ষোভ থেকে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়, যেখানে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম প্রাণ হারান।
নিহত সাইফুল ইসলামকে নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রকাশিত তথ্য বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা। সাইফুল ইসলাম চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী ছিলেন না এবং তিনি পুলিশের গুলিতে নিহত হননি। বরং তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিথ্যাচার ছড়ানো পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলতে পারে, যা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।