নিউজনেস্ট

হিজবুল্লাহ-ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি শুরু, বছরব্যাপী লড়াইর অবসান

হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি শুরু, এক বছরের সংঘর্ষের অবসান
হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি শুরু, এক বছরের সংঘর্ষের অবসান। ছবি : আল জাজিরা

আজ বুধবার ভোর ৪টায় ( বৈরুত সময়) এবং গ্রিনিচ সময় রাত ২টায়, হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির চুক্তি আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়। এর মধ্য দিয়ে এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা সীমান্ত সংঘর্ষ এবং দুই মাসের ভয়াবহ উন্মুক্ত যুদ্ধের পর শান্তি ফিরে আসার আশা তৈরি হয়েছে।

ইসরায়েলের সম্প্রচার মাধ্যম জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর দেশটির সেনাবাহিনী দক্ষিণ লেবাননের বাসিন্দাদের খালি করা গ্রামগুলোতে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। তারা জানায়, নিরাপদে ফেরার সময় সম্পর্কে পরে জানানো হবে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্রও একই সতর্কতা জারি করে বলেন, সেনাবাহিনী দক্ষিণ লেবাননে তাদের অবস্থানে মোতায়েন থাকবে। খালি করা গ্রামগুলোতে বা সেনাবাহিনীর অবস্থানের দিকে এগিয়ে না যেতে স্থানীয়দের সতর্ক করা হয়েছে।

যুদ্ধবিরতির ঠিক আগে, হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েল পরস্পরের বিরুদ্ধে তীব্র হামলা চালায়। হিজবুল্লাহ উত্তর ইসরায়েলে রকেট হামলার দাবি জানায়, অন্যদিকে ইসরায়েল বৈরুতসহ দক্ষিণ ও পূর্ব লেবাননের বিভিন্ন এলাকা এবং গ্রামে ব্যাপক বিমান হামলা চালায়।

এই উত্তেজনার মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির চুক্তি হওয়ার কথা ঘোষণা করেন। এর আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু চুক্তিতে তার সরকারের সম্মতির কথা জানান।

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে একটি ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, এই চুক্তি ইসরায়েল ও লেবাননের হাজার হাজার বাসিন্দাকে ঘরে ফেরার সুযোগ করে দেবে এবং ধ্বংস ও সহিংসতার অবসান ঘটাবে।

অস্টিন আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে, বিশেষত ইরানের সমর্থিত সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে।ই

সরায়েলের চ্যানেল ১৩-এর প্রতিবেদন অনুসারে, চুক্তির আওতায় হিজবুল্লাহসহ লেবাননের সব সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসরায়েলকে আক্রমণ বন্ধ করবে। এর বিনিময়ে, ইসরায়েল লেবাননের বিরুদ্ধে আকাশ, স্থল এবং সমুদ্রপথে কোনও সামরিক অভিযান চালাবে না।

চুক্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে শুধুমাত্র লেবাননের সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনীর অস্ত্র বহনের অনুমতি থাকবে। এছাড়া, অস্ত্র আমদানি, উৎপাদন এবং ব্যবস্থাপনা পুরোপুরি লেবাননের সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

চুক্তি অনুযায়ী, লেবানন ও ইসরায়েল উভয়েই জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ১৭০১ নম্বর প্রস্তাবের প্রতি তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।

ইসরায়েল ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে লেবাননের ওপর হামলা শুরু করে, যা ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে আরও ব্যাপক আকার ধারণ করে। রাজধানী বৈরুতসহ দেশটির অধিকাংশ এলাকাকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়।হিজবুল্লাহ প্রতিদিন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অবস্থান ও বসতিগুলোতে রকেট, ড্রোন এবং গোলাবর্ষণ করে প্রতিরোধ জানায়।

এই সংঘর্ষে ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৩,৮০০ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং ১৫,০০০-এর বেশি মানুষ আহত হয়েছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী ও শিশু রয়েছে। প্রায় ১৪ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে লেবাননের সরকারি পরিসংখ্যান জানিয়েছে।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত