ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস (ইসকন), বা আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ, বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একাধিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। হিন্দুত্ববাদী এই সংগঠনটির কার্যক্রম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা উস্কে দেওয়ার অভিযোগে বিভিন্ন দেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বাংলাদেশেও ইসকনের কার্যক্রম নিয়ে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তুলে এটি নিষিদ্ধ করার দাবি জোরালো হচ্ছে।
সম্প্রতি আইনজীবী আল মামুন রাসেল বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে একটি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন, যেখানে তিনি ইসকনের উগ্রবাদী ও সাম্প্রদায়িক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে এটিকে নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানান।
আইনি নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, ইসকনকে ইতোমধ্যে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমান রাশিয়া), এবং সিঙ্গাপুরে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, কাজাখস্তান এবং তুর্কেমেনিস্তানে সংগঠনটির কার্যক্রম কঠোর নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
এই দেশগুলোর প্রশাসন ইসকনের কার্যক্রমকে সামাজিক ও ধর্মীয় সহিংসতার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করেছে।
আইনি নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, ইসকনের কর্মকাণ্ড বাংলাদেশে একাধিক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার উস্কানি দিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ:
১. ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিনের ঘটনাঅভিযোগ রয়েছে যে, রাসূল মুহাম্মদ (সা.)-কে কটূক্তি করার পেছনে ইসকনের সদস্যরা সরাসরি ভূমিকা রেখেছিল। এ ঘটনায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং প্রাণহানির মতো দুঃখজনক ঘটনা ঘটে।
২. চট্টগ্রামে শিশুদের পূজা প্রসাদ খাওয়ানোইসকনের মাধ্যমে মুসলিম শিশুদের পূজার প্রসাদ খাওয়ানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়ায়।
৩. মসজিদে হামলা ও বিরোধঢাকার স্বামীবাগ এলাকায় ইসকনের সংগীত অনুষ্ঠানের কারণে মুসল্লিদের তারাবির নামাজে ব্যাঘাত ঘটে। মুসল্লিরা এ বিষয়ে আপত্তি জানালে ইসকনের সদস্যরা পুলিশ ডেকে পরিস্থিতি উত্তেজিত করে তোলে। পুলিশ এসে হিন্দুদের কিছু না বলে উল্টো মুসলিমদের উপর আক্রমন করে।
এক সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ইসকন ধর্মীয় কার্যক্রমের আড়ালে নিম্নবর্ণের হিন্দুদের জোরপূর্বক সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত করছে এবং সাধারণ হিন্দুদের ওপর তাদের বিশ্বাস চাপিয়ে দিচ্ছে।
আইনি নোটিশে ইসকনের এই সাম্প্রদায়িক ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে বাংলাদেশে এটিকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলা হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেছেন, ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮ নম্বর ধারার আওতায় এই সংগঠনের কার্যক্রম বন্ধ করা উচিত।
বাংলাদেশের মতো একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে ইসকনের কর্মকাণ্ডের মতো বিষয়গুলোর প্রতি প্রশাসনের বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে দাবি তুলেছেন সংশ্লিষ্টরা।