সিরিয়ার বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে আলেপ্পো শহরের কেন্দ্রীয় এলাকা এবং উত্তর-পশ্চিম ইদলিব প্রদেশের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে । গত পাঁচ বছরের মধ্যে এটিই তাদের সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে সিরীয় কর্তৃপক্ষ আলেপ্পো বিমানবন্দর বন্ধ ঘোষণা করে এবং সব ফ্লাইট স্থগিত করে।
বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সাম্প্রতিক এক বিবৃতিতে জানানো হয়, তারা আলেপ্পোর ঐতিহাসিক কেল্লা এবং উমাইয়া মসজিদ দখল করেছে। পাশাপাশি, নাগরিকদের সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে দখলকৃত এলাকাগুলোয় আগামীকাল সকাল পর্যন্ত কারফিউ জারি করেছে।
বিরোধী পক্ষের দাবি, কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তারা আলেপ্পো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে শহর মুক্ত ঘোষণা করবে। ‘রদউল-ওদওয়ান’ নামে পরিচিত এই অভিযানটি বাশার আল আসাদের জুলুম ও পরিকল্পিত হামলার প্রতিক্রিয়ায় শুরু হয়েছে। এর আগে তারা আলেপ্পোর গভর্নরের কার্যালয়, মিউনিসিপ্যাল ভবন, পুলিশ সদর দপ্তর, আলেপ্পো কেল্লা এবং বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা দখল করে।
বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর দাবি, তারা আলেপ্পোর পশ্চিম অংশের প্রায় পুরোটা, দক্ষিণ ও পূর্বাংশের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা এবং মধ্যাঞ্চলের বেশ কয়েকটি অঞ্চল নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। সামরিক গবেষণা কেন্দ্র, সামরিক ও আর্টিলারি কলেজ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কয়েকটি ঘাঁটিও তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
অন্যদিকে, ইদলিব প্রদেশের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ সারাকেব শহরও বিরোধীদের হাতে চলে গেছে। শহরটি আলেপ্পো-দামেস্ক এবং আলেপ্পো-লাতাকিয়া মহাসড়কের সংযোগস্থলে অবস্থিত।এদিকে সিরিয়ার সরকারি বাহিনী আলেপ্পোর নতুন এলাকায় বিমান হামলা চালিয়েছে। সেনাবাহিনীর একটি সূত্র বলছে, কিছু এলাকা থেকে ‘নিরাপদ প্রস্থানের’ নির্দেশনা পেয়েছে তারা। শহরের বাইরে চেকপয়েন্টগুলোতে কেবল সরকারি বাহিনীর চলাচলের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তারা কিছু হারানো এলাকা পুনরুদ্ধার করেছে এবং ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর’ বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রেখেছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতে, একদিনে আলেপ্পো ও ইদলিবে ২০০ বিদ্রোহীকে হত্যা করা হয়েছে।
আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়া
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সিরিয়ার বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। পাশাপাশি, তারা আস্থানা চুক্তি লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে মনে করছে।
ইরানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সিরিয়ায় ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো’র উত্থান মার্কিন-ইসরাইলি পরিকল্পনার অংশ। ইরানও সিরিয়ার সরকারের প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে।
মস্কো ও তেহরান—যারা সিরিয়ার প্রধান মিত্র— জোর দিয়ে বলেছে, তারা ‘সন্ত্রাসীদের’ বিজয় কোনোভাবেই হতে দেবে না। সিরিয়ার সরকারকে সামরিক ও রাজনৈতিক সহযোগিতা দিয়ে আগের মতোই শক্তিশালী রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
সূত্র : আল জাজিরা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link