নিউজনেস্ট

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও জনকল্যাণে প্রতারণার অভিযোগে বিতর্কিত সাবেক এমপি কমল

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও জনকল্যাণে প্রতারণার অভিযোগে বিতর্কিত সাবেক এমপি কমল
কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু-ঈদগাঁও) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল। ছবি : সংগৃহীত

কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু-ঈদগাঁও) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং জনকল্যাণমূলক কার্যক্রমে শতকোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। মসজিদ, মন্দির, মাদ্রাসা, এতিমখানা এবং মাহফিলে বড় অঙ্কের অনুদানের ঘোষণা দিয়ে প্রশংসা কুড়ালেও, বাস্তবে কোনো প্রতিশ্রুতিই তিনি রক্ষা করেননি। অভিযোগ রয়েছে, অন্তত পাঁচ শতাধিক প্রতিষ্ঠান তার এ ধরনের প্রতারণার শিকার হয়েছে। এমনকি প্রতিবন্ধীদের সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের সঙ্গেও প্রতারণা করেছেন তিনি।

কমলের আপন বড় ভাই ও রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেল সরওয়ার কাজল জানিয়েছেন, গত ১৫ বছরে মসজিদ-মন্দিরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অনুদানের ঘোষণা দিয়ে কমল অন্তত শতকোটি টাকার প্রতারণা করেছেন। ছোট বোন ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী এ অভিযোগকে আরও প্রসারিত করে বলেন, এই অংক হাজার কোটি টাকাও ছাড়িয়ে যেতে পারে।

প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবতা

• ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান:ঈদগাঁও ইসলামপুরের বামানকাটা জামে মসজিদে তিন দফায় ৯ লাখ টাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তিনি এক পয়সাও দেননি।রামু উপজেলার ইসলাম মাহমুদের তথ্যমতে, গর্জনিয়া এলাকার ১০টি মসজিদে প্রায় ৩ কোটি টাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণা করেছেন কমল।

• খেলাধুলা ও শিক্ষা:ঈদগাঁওতে ফুটবল খেলার মাঠ সংস্কারের জন্য ১৫ লাখ টাকার ঘোষণা, ইসলামপুর পাবলিক মডেল স্কুলে ১ লাখ টাকার প্রতিশ্রুতি—সবই ছিল কথার কথা।

• প্রতিবন্ধীদের প্রতারণা:সন্ত্রাসী হামলায় পা হারানো সাংবাদিক আনোয়ার হোসেনকে কৃত্রিম পা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২ লাখ টাকার সাহায্যের ঘোষণা দিলেও কমল কিছুই দেননি।

সরকারি জমি দখল থেকে শুরু করে ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতায় সম্পদের পাহাড় গড়েছেন কমল। অনুসন্ধানে জানা গেছে, তার পৈতৃক সম্পত্তি ছিল মাত্র দেড় কানি জমি। অথচ বর্তমানে তিনি হাজার কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক।

কক্সবাজারের রশিদ নগরে সরকারি জমি দখল করে সেখানে একটি কলেজের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে জমি বিক্রির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

কক্সবাজারে ‘ওসমান ভবন’ নামে একটি বিশাল প্রাসাদ নির্মাণ করেছেন কমল। দৃশ্যমান কোনো ব্যবসা না থাকলেও, বিগত ১০ বছরে তার সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে কয়েকশ গুণ।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে সাইমুম সরওয়ার কমল পলাতক। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে। তবে সরকারের মেয়াদকালে এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন, ‘দিনে ৩টার সময় ঘুম থেকে উঠা মানুষগুলোই আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে। আমি মানুষের উন্নয়ন নিয়েই ব্যস্ত থাকি।’

কমলের এ ধরনের কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ স্থানীয় জনগণ। তারা আশা করছেন, বিষয়গুলো তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ডেস্ক রিপোর্ট
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত