দক্ষিণ লেবাননে যুদ্ধবিরতির পঞ্চম দিনে রবিবার ইসরায়েলি বাহিনী অন্তত ১১টি নতুন হামলা চালিয়েছে। লেবাননের সরকারি বার্তাসংস্থা এনএনএ (ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি) এক প্রতিবেদনে বলেছে, ‘পরিস্থিতি এমন, যেন আমরা যুদ্ধবিরতির আওতায় নেই।’
বার্তাসংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের ড্রোন টায়ার জেলার বিভিন্ন গ্রামে উড়তে দেখা গেছে। ইয়ারোন এবং মারুন গ্রামসংলগ্ন এলাকায় ড্রোনের পাশাপাশি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
এছাড়া, ইসরায়েলি বাহিনী চারটি মর্টার শেল ছুড়েছে খিয়াম অঞ্চলে, যার একটি শেল মারজাইউন ও খিয়ামের মধ্যবর্তী একটি চ্যালেট ভবনে আঘাত করে। ভোরের দিকে খিয়ামে আরও কটি বিশাল বিস্ফোরণ ঘটে। বার্তাসংস্থা আরও জানায়, ‘ইসরায়েলি বাহিনী খিয়ামে বাড়িঘর ধ্বংসের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের স্পষ্ট উদাহরণ। বিস্ফোরণের শব্দ এবং ধোঁয়ার কুণ্ডলী পুরো দক্ষিণ লেবাননে দৃশ্যমান।’
নাবাতিয়া জেলার মারুন আল-রাস অঞ্চলের ইসরায়েলি ঘাঁটি থেকে বেন্ট জেবেইল শহরের দিকে ভারী মেশিনগানের গুলি চালানো হয়। এতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ধোঁয়া দেখা গেছে। কিছু বাড়ি ধ্বংস হয়েছে।
বেন্ট জেবেইল জেলার ইয়ারোন গ্রামে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান হামলা চালিয়েছে। এর আগে ভোরে গ্রামটির আবাসিক এলাকাগুলোতে গুলি ছোড়ে ইসরায়েলি সেনারা। একইসঙ্গে, আইতারুন গ্রামের প্রান্তে মর্টার শেল নিক্ষেপ করা হয়।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা দক্ষিণ লেবাননের হিজবুল্লাহর বিভিন্ন অবস্থান লক্ষ্য করে অভিযান চালিয়েছে।’ তারা এই অবস্থানগুলোকে ‘ইসরায়েলের জন্য সরাসরি হুমকি এবং যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনকারী’ বলে দাবি করেছে।
অন্যদিকে, হিজবুল্লাহ এখনো ইসরায়েলি হামলাগুলোর বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে তারা জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির শর্তগুলো পর্যবেক্ষণ করছে তারা। তাদের ‘আঙুল ট্রিগারেই রয়েছে।’
২৭ নভেম্বর থেকে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। এই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ইসরায়েল ধীরে ধীরে ব্লু লাইনের দক্ষিণে সরে যাবে এবং সীমান্তে লেবাননের সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকবে।
যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর থেকে ইসরায়েলের ৬২টি লঙ্ঘনের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। এসব হামলায় এখন পর্যন্ত দুইজন নিহত এবং ১০ জন আহত হয়েছেন।
এদিকে, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার ফলে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩ হাজার ৯৬১ জনে দাঁড়িয়েছে। আহতের সংখ্যা ১৬ হাজার ৫২০ জনে পৌঁছেছে, যাদের মধ্যে বহু নারী ও শিশু রয়েছে।
সূত্র : টিআরটি অ্যারাবিক