নিউজনেস্ট

ইউসিবি ব্যাংক থেকে ২ হাজার কোটি টাকা লুটপাট সাইফুজ্জামানের

ইউসিবি ব্যাংক থেকে ২ হাজার কোটি টাকা লুটপাট সাইফুজ্জামানের
ইউসিবি ব্যাংক থেকে ২ হাজার কোটি টাকা লুটপাট সাইফুজ্জামানের। ছবি: সংগৃহীত

অনিয়ম করে দুই হাজার কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে বেসরকারি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি)। জেনেক্স ইনফোসিসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আদনান ইমামের চারটি প্রতিষ্ঠান এই ঋণ পেয়েছে, যা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ অনুমোদন করলেও ব্যবস্থাপনা কমিটির সুপারিশ ছাড়াই দেওয়া হয়। এ বিষয়ে ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান শরীফ জহির দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) অভিযোগ জানিয়েছেন।

ইউসিবির এসব অনিয়ম ঘটে ২০১৮ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে। এই সময়ে ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর স্ত্রী রুকমিলা জামান। পরিচালনা পর্ষদে ছিলেন তার ভাই আনিসুজ্জামান চৌধুরী। সাইফুজ্জামান ও আদনান ইমামের ঘনিষ্ঠতা যুক্তরাজ্যের আবাসন খাতের ব্যবসা কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে।

অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, সাইফুজ্জামান যুক্তরাজ্যে ৩৬০টি বাড়ির মালিক, যার বাজারমূল্য বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩ হাজার ৮২৪ কোটি টাকা। এই ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ভিত্তিতেই ব্যাংক থেকে অনিয়মিত ঋণ অনুমোদিত হয়েছে বলে অভিযোগ।

২০২১ সালে জেনেক্স ইনফোসিসের ৬০ লাখ শেয়ার ১০৪ কোটি টাকায় কেনে ইউসিবি। কিন্তু বাজারমূল্য কমে যাওয়ায় প্রায় ৭৮ কোটি টাকার লোকসান হয়। এই শেয়ার বিক্রেতারা আদনান ইমামের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়, যা স্পষ্টতই স্বার্থের সংঘাত সৃষ্টি করেছে।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আদনান ইমামের বাবা চৌধুরী ফজলে ইমামের প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে ২ হাজার কোটি টাকার ঋণ অনুমোদিত হয়। ব্যবস্থাপনা কমিটির সুপারিশ ছাড়াই এই ঋণ বিতরণ করা হয়। সাইফুজ্জামানের চাচাতো ভাই আলমগীর কবীর অপুকে অযৌক্তিকভাবে পদোন্নতি দিয়ে ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করানো হয়। বর্তমানে আলমগীর কবীর বিদেশে পলাতক।

ইউসিবির চেয়ারম্যান শরীফ জহির জানান, ব্যাংকের স্বার্থ রক্ষায় সাইফুজ্জামান চৌধুরী, আদনান ইমাম, জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার বিক্রেতা আমির রাসূল ও জাহারা রাসূলসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তদন্তের প্রয়োজন।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে সাইফুজ্জামানের পরিবারের হাতে ইউসিবির নিয়ন্ত্রণ আসে। তিনি ২০১৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত ভূমিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু আইন অনুযায়ী কোনো মন্ত্রী ব্যাংক পরিচালনায় থাকতে পারেন না। নিরীক্ষা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এই সময়েই বড় অঙ্কের ঋণ বিতরণে অনিয়ম হয়েছে।

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইউসিবির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে। পরবর্তী নিরীক্ষায় ঋণ বিতরণের অনিয়ম প্রকাশ পায়। শরীফ জহির এই বিষয়ে দুদকে তদন্তের অনুরোধ জানিয়েছেন। তবে আদনান ইমামের কাছ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

নিউজনেস্ট ডেস্ক
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত