মাত্র এক দিনের নাটকীয় ঘটনার মধ্য দিয়ে সিরিয়ার বাশার আল আসাদের দীর্ঘ শাসনের পতন ঘটে। বাহ্যিকভাবে শক্তিশালী মনে হলেও আসাদ সরকারের ভঙ্গুর শাসনব্যবস্থা দ্রুত ভেঙে পড়ে। সামরিক ব্যর্থতা, বিদ্রোহীদের দ্রুত অগ্রগতি এবং জনগণের প্রতিরোধ এই পরিণতি নিশ্চিত করে।
৭ই ডিসেম্বর
গত ৭ই ডিসেম্বর ভোরে সিরিয়ার বিদ্রোহীরা হিমস শহরের উপকণ্ঠে বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালায়। রাস্তান, তালবিসা, আল দার আল কাবিরা এবং তির মালাহসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। ড্রোন ও আর্টিলারি হামলার মুখে আসাদের বাহিনী পুরোপুরি পিছু হটতে বাধ্য হয়।
একই সময়ে দারা এবং সুওয়াইদা অঞ্চলেও সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হয়। সাধারণ জনগণ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগ দিয়ে সামরিক চৌকিগুলো দখল করে। বিদ্রোহীদের এই সমন্বিত আক্রমণ আসাদ বাহিনীর ভেতরে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে।
এদিকে ‘ফ্রি সিরিয়ান আর্মি’ পালমিরা ও কালামুন অঞ্চলে বিশাল আকারে সামরিক আক্রমণ চালায়। নাসিরিয়া ও রাহিবা শহর বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
সরকারি বাহিনীর সদস্যরা একে একে অস্ত্র ত্যাগ করতে শুরু করে। অনেকেই বেসামরিক পোশাক পরে পালিয়ে যায়। এসব দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা সারা দেশে আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের মনোবল বাড়িয়ে দেয়।
৮ই ডিসেম্বর
৮ই ডিসেম্বর সকালে বিদ্রোহীরা দামেস্কের আম্মাইন স্কয়ারে প্রবেশ করে। জনগণ রাস্তায় নেমে আসাদ সরকারের প্রতীকসমূহ ধ্বংস করে। সরকার বাহিনী কোনো প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়।
অবশেষে বিদ্রোহীদের অগ্রগতির মুখে বাশার ৮ই ডিসেম্বর স্বৈরাচার আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। এরই মধ্যে দামেস্কের রাস্তায় বিদ্রোহীদের বিজয় উদযাপনের দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। আনন্দ-উল্লাসে ফেটে পড়ে রাজধানীর মানুষ।
এই ২৪ ঘণ্টার ঘটনাপ্রবাহ দেখিয়ে দেয়, শক্তিশালী মনে হলেও দমনমূলক শাসনব্যবস্থার ভিত্তি কতটা ভঙ্গুর হতে পারে। সামরিক পরাজয়, শৃঙ্খলার অভাব এবং গণমাধ্যমের প্রচার আসাদ শাসনের পতনকে আরও দ্রুততর করে তোলে।
সূত্র: আল জাজিরা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link