পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে কমিশন গঠন থেকে সরে আসায় আজ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও নির্বাহী কমিটির ১নং সদস্য মাহিন সরকার পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ভিক্টিম পরিবারগুলোকে সাথে নিয়ে আগামীকাল ১৭ই ডিসেম্বর আইন উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও করার ঘোষণা দেন নিজের ফেসবুক পোস্টে। সেই পোস্ট শেয়ার করে সংহতি জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ লিখেন, ‘আমি আমার ভাই মাহিনের পক্ষে। বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার হতেই হবে।’
মাহিন সরকার তার অফিশিয়াল ফেসবুক আইডিতে লিখেন,
‘দায়িত্ব গ্রহণের চার মাস অতিবাহিত হওয়ার পরেও বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে না পারা হলো এই অন্তর্বর্তী সরকারের একটি চরম ব্যর্থতা। বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিতে কমিশন গঠনে গড়িমসি করে এই সরকার দেশের তামাম জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। যা স্পষ্টতই প্রহসনের শামিল।
অপরদিকে একাত্তরে বাংলাদেশের আপামর মুক্তিকামী জনতার অর্জিত বিজয়কে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারত তাদের নিজেদের জয় বলে আখ্যা দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এমতাবস্থায় বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে অবহেলা করা এবং ভারতের এমন ইতিহাস বিকৃতির স্পষ্ট প্রতিবাদ না জানানো আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ।
এরই প্রতিবাদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের একজন নগণ্য অংশীদার হিসেবে আমি মাহিন সরকার বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ভিক্টিম পরিবারগুলোকে সাথে নিয়ে আগামীকাল ১৭ই ডিসেম্বর আইন উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও করব। আমার সাথে যদি কেউ নাও যায়, এমনকি পুরো বাংলাদেশের একজনও যদি আমার পক্ষে না থাকে তবুও আমি আমার এই দৃঢ় অবস্থান থেকে বিন্দুমাত্র পিছু হটবো না!
কোন ভিনদেশি পরাশক্তি কিংবা হাজারো শহিদের রক্তের বিনিময়ে ক্ষমতায় আসীন হওয়া এই অন্তর্বর্তী সরকারও যদি আমার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তবুও আমি বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিতে আমৃত্যু লড়ে যাব। এই বিচার নিশ্চিত না করা পর্যন্ত সংস্কার কার্যক্রম কিংবা কমিশন গঠনের নামে দীর্ঘসূত্রিতার কোন পদক্ষেপকে আমি গ্রাহ্য করব না। আগামীকাল সকাল ১১টায় সচেতন ছাত্র-নাগরিকের সাথে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দেখা হবে ইনশাআল্লাহ।‘
এদিকে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের তদন্ত নিয়ে কমিশন গঠন থেকে সরে আসায় অনলাইনে তুমুল সমালোচনার ঝড় ওঠে। সমালোচকদের অনেকে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে দায়ী করেন। আসিফ নজরুল তার অফিশিয়াল ফেসবুক পেইজে জানান, কমিশন গঠনের দায়িত্ব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কমিশন গঠন করার পক্ষে মতামত দেয়া হয়েছিল।