নিউজনেস্ট

স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার বিপ্লবী প্রতিরোধ

স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার বিপ্লবী প্রতিরোধ
স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার বিপ্লবী প্রতিরোধ। ছবি : আল জাজিরা

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে আরেকটি নতুন অধ্যায় যুক্ত হলো। ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা আবারও রাস্তায় নেমেছে। জনগণের টাকায় গড়া শাসকগোষ্ঠীর বিলাসী আস্তানাগুলো তারা প্রতীকী প্রতিরোধের মাধ্যমে ধ্বংস করছে।

গতকালের পর আজ বৃহস্পতিবার সকালেও ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙার কাজ চলতে দেখা গেছে। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ভারী যন্ত্র দিয়ে বাড়ির বিভিন্ন অংশ ভাঙা হচ্ছিল। তিনতলা পর্যন্ত অংশ অনেকটাই গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ক্রেন ও এক্সকাভেটর দিয়ে বাড়িটির বিভিন্ন অংশ ভাঙা হচ্ছিল। কিছু জায়গায় আগুন জ্বলছিল। বাড়ির বিভিন্ন অংশে লাল কালি দিয়ে লেখা ছিল, ‘স্বৈরাচার সাবধান।’

এদিকে বুধবার ৫ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ থেকে একদল বিপ্লবী ছাত্র-জনতা মিছিল বের করে। ‘২৪-এর বিপ্লবী ছাত্রজনতা’ ব্যানারে ‘বুলডোজার মিছিল’ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়। শাসকগোষ্ঠীর অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে তারা গর্জে ওঠেন।

মিছিলটি জেলা কালেক্টর ভবনের সামনে পৌঁছালে তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ম্যুরাল গুঁড়িয়ে দেয়। তাদের বক্তব্য, যারা গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, তাদের প্রতীকী নিদর্শনও তারা রাখতে দেবে না। এরপর তারা চুয়াডাঙ্গা আওয়ামী লীগের জেলা কার্যালয়ে গিয়ে ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রতীকী পতন নিশ্চিত করতে সেখানে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার ৬ ফেব্রুয়ারি রাত ২টার দিকে বরিশালে সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমুর বিলাসবহুল বাসভবনে প্রতিরোধের আগুন জ্বলে ওঠে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এর আগে রাত ১২টার দিকে বরিশালের কালীবাড়ি রোডে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর দুর্নীতির মাধ্যমে গড়া বিশাল বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর মিছিল সহকারে ছাত্র-জনতা আমির হোসেন আমুর বাসভবনের সামনে এসে প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং দুর্নীতির প্রতীক সেই ভবন গুঁড়িয়ে দেয়।

বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের যত আস্তানা আছে, আমরা তা গুঁড়িয়ে দিতে চাই। জনগণের টাকা লুট করে তৈরি হওয়া এইসব প্রাসাদ থাকবে না। আমরা শাসকের অন্যায়-অত্যাচারের ইতিহাস মুছে ফেলব।’

গত ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ছয় মাস পূর্ণ হয়েছে বুধবার। কিন্তু এখনো শাসকগোষ্ঠীর অপশাসনের ছাপ রয়ে গেছে। ছাত্র-জনতা সেই অপশাসনের চিহ্ন মুছে ফেলতে রাস্তায় নেমেছে।

বাংলার ইতিহাস সাক্ষী, যখনই অন্যায়-অত্যাচার বাড়ে, তখনই ছাত্র-জনতা রাজপথে নেমে আসে। এই লড়াই শুধু প্রতীকী নয়, বরং শোষণের বিরুদ্ধে, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে, জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই।

নিউজনেস্ট ডেস্ক
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত