পশ্চিমবঙ্গে ট্রেনে ‘বাংলাদেশি’ বলে মুসলিম ছাত্রের ওপর উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলা!

পশ্চিমবঙ্গে ট্রেনে ‘বাংলাদেশি’ বলে মুসলিম ছাত্রের ওপর উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলা!
পশ্চিমবঙ্গে ট্রেনে ‘বাংলাদেশি’ বলে মুসলিম ছাত্রের ওপর উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলা। ছবি : মুসলিম মিরর

পশ্চিমবঙ্গের শিয়ালদহগামী এক ট্রেনে একদল উগ্রপন্থী হিন্দুত্ববাদী ব্যক্তি এক মুসলিম ছাত্রের ওপর হামলা চালিয়েছে। ২৭ বছর বয়সী রেজাউল ইসলাম মণ্ডল, যিনি আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এম.টেক শেষ বর্ষের ছাত্র এবং হুগলি জেলার মেশেরা গ্রামের বাসিন্দা। তাকে । হামলাকারীরা তাকে ‘বাংলাদেশি’ বলে অপবাদ দিয়ে মারধর করে ও দাড়ি ধরে টানাটানি করে। এমনকি তাকে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ারও হুমকি দেয় তারা।

দ্য অবজারভার পোস্ট-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রেজাউল তার চার বন্ধুর সঙ্গে বাংলাদেশে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিয়ে ফেরার সময় গেদে স্টেশন থেকে শিয়ালদহগামী ট্রেনে উঠেছিলেন। ট্রেনে এক যাত্রী তার ট্রলি ব্যাগ সরাতে বলেন, তিনি তা সরিয়ে নেন। কিন্তু এরপরই ১০–১২ জনের একটি দল তার আসন থেকে জোর করে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে। বাধা দিলে তারা তাকে ‘বাংলাদেশি’ বলে কটাক্ষ করতে থাকে।

প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ওই দলটি রেজাউলকে মারধর করে। তাকে ঘুষি ও লাথি মারা হয়, তার টুপি খুলে ফেলা হয় এবং দাড়ি ধরে টান দেওয়া হয়। এমনকি কিছু হামলাকারী অন্যদের তাকে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার জন্য উসকানি দেয়। রেজাউলের বন্ধু সাজিদ মির্জা হামলার ভিডিও করার চেষ্টা করলে তাকেও ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। সাজিদ গণমাধ্যমকে জানান, হামলাকারীরা তাদের ‘অশিক্ষিত জঙ্গি’ বলে গালিগালাজ করে এবং তার বিরুদ্ধে ‘দেশের শত্রু’ বলে অভিযোগ তোলে।

এদিকে চিকিৎসা নেওয়ার পর রেজাউল প্রথমে হরিপাল থানায় অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ তা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে ৫ ফেব্রুয়ারি তিনি শিয়ালদহ সরকারি রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি)-এর কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। এ ঘটনায় ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে এবং রেল পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী ঘটনাটির নিন্দা জানিয়ে বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতিকে দায়ী করেছেন এবং তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করেছেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, রেজাউলের দাড়ি ও টুপিই কি হামলার কারণ?

আমাদের ফলো করুন