তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে চীন। এখন শুধুই বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্তের অপেক্ষা। ঢাকায় চীনা দূতাবাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
তিনি বলেন, ‘তিস্তা পাড়ের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবের জন্য প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন করা জরুরি। ২০২১ সালে বাংলাদেশ সরকার আমাদের কাছে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানায়। পরবর্তীতে আমরা প্রয়োজনীয় সমীক্ষা শেষ করে ২০২৩ সালে বাংলাদেশ সরকারকে প্রতিবেদন দিয়েছি। তবে এখনো আমরা আনুষ্ঠানিক কোনো জবাব পাইনি।’
তিস্তা প্রকল্প নিয়ে দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়। তবে প্রকল্পটি তিস্তা পাড়ের মানুষের ভাগ্য বদলে দিতে পারে বলে তিনি মনে করেন। “বাংলাদেশ চাইলে নিজস্ব উদ্যোগেও প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে পারে, তবে আমরা এতে সহায়তা দিতে প্রস্তুত,” যোগ করেন তিনি।
এদিকে বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসার জন্য চীনের কুনমিং শহরের তিনটি শীর্ষস্থানীয় হাসপাতাল নির্বাচন করা হয়েছে বলে জানান রাষ্ট্রদূত। চলতি মাসের শেষ দিকে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল সেখানে গিয়ে চিকিৎসা-সুবিধা পর্যবেক্ষণ করবেন। চীন বিশেষ একটি মেডিকেল প্যাকেজ তৈরি করছে, যাতে চিকিৎসা নিতে আগ্রহী বাংলাদেশিরা ভিসা, বিমান ভাড়া ও চিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা একসঙ্গে পেতে পারেন।
এ ছাড়া, চীনের অর্থায়নে বাংলাদেশেও আধুনিক মানের একটি হাসপাতাল তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও চলমান সংস্কার প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন, এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, অচিরেই রাজনৈতিক দলগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছাবে এবং উন্নয়ন-অগ্রগতিতে ঐকমত্য গড়ে তুলবে।
বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সামরিক সম্পর্ক নিয়েও কথা বলেন ইয়াও ওয়েন। তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে চীন বাংলাদেশকে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করে আসছে। বর্তমানে আরও অনেক দেশ বাংলাদেশকে সামরিক সরঞ্জাম দিতে চাইলেও চীনই সবচেয়ে উপযুক্ত সহযোগী বলে তিনি মনে করেন।
সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ছিলেন দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তারা, যাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন চীনা দূতাবাসের রাজনীতিবিষয়ক সহকারী লিন ইউয়াং।







