ইতালি রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে ৩০ লাখ ইউরো সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে এই সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড জানিয়েছে, এই সহায়তার মধ্যে ১০ লাখ ইউরো দেওয়া হবে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থাকে (ইউএনএইচসিআর)। এটি রোহিঙ্গাদের নিরাপদ জীবনযাপনের পরিবেশ তৈরি, নিবন্ধন, আশ্রয়, স্বাস্থ্যসেবা, পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা নিশ্চিত করতে ব্যয় হবে।
এছাড়া ২০ লাখ ইউরো দেওয়া হবে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচিকে (ডব্লিউএফপি)। এই তহবিল থেকে খাদ্য সহায়তা, অপুষ্টি প্রতিরোধ এবং শিশু ও গর্ভবতী নারীদের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো বলেছেন, ‘রোহিঙ্গাদের প্রতি ইতালির সংহতি ও মানবিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি অব্যাহত থাকবে।’
এছাড়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ইতালির উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থার পরিচালক মার্গেরিটা লোলি বলেন, ‘এই সহায়তা বিশ্বের অন্যতম দুর্বল জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের জরুরি চাহিদা পূরণে ইতালির দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতিফলন।’
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার প্রতিনিধি সামবোল রিজভি বলেন, ‘এটি ইতালির জনগণের রোহিঙ্গা শরণার্থী ও বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের প্রতি সংহতির বহিঃপ্রকাশ।’
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির বাংলাদেশ পরিচালক ডম স্কাপেলি বলেন, ‘প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার মানবিক চাহিদা অত্যন্ত জটিল। ইতালির সহায়তা এই সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
এর আগে, সম্প্রতি জাপানও রোহিঙ্গাদের জন্য ১৮ লাখ ডলার সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাপী ৯০ দিনের জন্য সহায়তা স্থগিত করায় রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তার পরিমাণ কমে গেছে। এর ফলে বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্য ও সেবা কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে বা কার্যক্রম সীমিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর পর থেকে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়। বর্তমানে তারা কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছে, যা জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির।
এদিকে সম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও সন্ত্রাসী আরাকান আর্মির মধ্যে নতুন করে সংঘাত তীব্র হওয়ায় রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
সূত্র: আরাকান নিউজ এজেন্সি







