নিউজনেস্ট

ভারতের উত্তর প্রদেশে ইফতারির ঘোষণা মাইকে দেওয়ায় ইমামসহ ৯জন গ্রেফতার

ভারতের উত্তরপ্রদেশের রামপুর জেলার মানাকপুর বজরিয়া গ্রামে ইফতারের ঘোষণা মাইকে দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। উগ্র হিন্দুত্ববাদী একটি সংগঠনের আপত্তির পর পুলিশ হস্তক্ষেপ করে মসজিদের ইমামসহ মোট ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মানাকপুর বজরিয়া গ্রামের মসজিদটি গত ১৫-২০ বছর ধরে গ্রামের মুসলিম সম্প্রদায়ের উপাসনাস্থল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। রবিবার সন্ধ্যায় মসজিদের ইমাম ইফতারের সময় জানাতে লাউডস্পিকার ব্যবহার করেন। এ ঘটনায় স্থানীয় কিছু হিন্দু ব্যক্তি আপত্তি জানিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন।

পুলিশ ১১২ জরুরি পরিষেবার মাধ্যমে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। পরে মসজিদের ইমামসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং মসজিদের লাউডস্পিকারটি সরিয়ে নেওয়া হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অতুল কুমার শ্রীবাস্তব বলেন, ‘মসজিদ থেকে লাউডস্পিকারে ইফতার ঘোষণার পর দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

তবে স্থানীয় মুসলিমরা পুলিশের এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছেন। তাদের প্রশ্ন, যখন মসজিদ থেকে আজানসহ অন্যান্য ধর্মীয় ঘোষণা দেওয়া হয়, তখন ইফতার ঘোষণাকে কেন নতুন রীতি হিসেবে ধরা হলো?

স্থানীয় ধর্মীয় নেতা মাওলানা রাশিদ আহমেদ বলেন, ‘এটি একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে টার্গেট করার স্পষ্ট উদাহরণ। বহুদিন ধরে মসজিদ থেকে ধর্মীয় ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে, হঠাৎ করে কেন এটি সমস্যা হয়ে দাঁড়াল?’

আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী শারিক আনোয়ার বলেন, ‘এই গ্রেপ্তার এবং লাউডস্পিকার অপসারণ ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত। এটি সাম্প্রদায়িক বৈষম্য ও দ্বৈত নীতির প্রতিফলন।’

এই ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসন শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে এবং উভয় সম্প্রদায়কে উত্তেজনা না ছড়ানোর অনুরোধ করেছে। তবে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠন প্রতিবাদ জানিয়েছে।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোশ্যাল মিডিয়ায়ও ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকে একে ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

নিউজনেস্ট ডেস্ক
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত