ধর্ষণ এক ভয়াবহ সামাজিক অপরাধ, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং নৈতিক অবক্ষয়ের চূড়ান্ত রূপ। ইসলামি শরিয়ায় এটি কবিরা গুনাহ হিসেবে বিবেচিত এবং কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। দেশের সাধারণ আলেম সমাজ দীর্ঘদিন ধরে এই অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার অবস্থান গ্রহণ করে আসছে। একই সঙ্গে তারা ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী ধর্ষণ দমনে কঠোর আইন প্রণয়ন ও কার্যকর করার দাবি জানিয়ে আসছে।
সাধারণ আলেম সমাজের মতে, ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ নির্মূল করতে হলে ইসলামের সুনির্দিষ্ট বিধান বাস্তবায়ন করতে হবে। ইসলাম ধর্ষকের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান দিয়েছে, যাতে সমাজ থেকে এই অপরাধ পুরোপুরি নির্মূল হয়।
শরিয়া আইনে ধর্ষণ প্রমাণিত হলে বিবাহিত ধর্ষকের জন্য পাথর মেরে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। ইসলাম নারীকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও মর্যাদা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তাই ধর্ষণের মতো অপরাধের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের শিথিলতা বরদাস্ত নয়। সাধারণ আলেম সমাজের দাবি, শরিয়া আইন বাস্তবায়ন করা হলে সমাজে ধর্ষণের মতো অপরাধের সংখ্যা শূন্যের কোটায় নেমে আসবে।
ইসলাম নারীকে সর্বোচ্চ সম্মান ও মর্যাদা প্রদান করেছে এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন বিধান প্রবর্তন করেছে। আলেম সমাজের মতে, সমাজে ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ করতে হলে ইসলামি নিয়মকানুন মেনে চলা জরুরি। ইসলামে নারীর অধিকার রক্ষায় যে বিষয়গুলো গুরুত্ব পেয়েছে, সেগুলো হলো—
১. শান্তি ও নিরাপত্তার অধিকার : নারীদের যাতে ভয় ও শঙ্কার মধ্যে বসবাস করতে না হয়, সে জন্য ইসলাম পর্দা, অভিভাবকের সুরক্ষা ও সামাজিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে।
২. ন্যায়বিচার পাওয়ার নিশ্চয়তা : কোনো নারীর প্রতি অন্যায় হলে তাকে ন্যায়বিচার দেওয়ার কঠোর নির্দেশনা রয়েছে।
৩. অর্থনৈতিক নিরাপত্তা : ইসলাম নারীকে সম্পদের মালিকানা ও নিজ অর্থ উপার্জনের স্বাধীনতা দিয়েছে। একই সঙ্গে তার মৌলিক চাহিদা পূরণের দায়িত্ব পুরুষের ওপর অর্পণ করেছে।
৪. সম্মান ও মর্যাদা : ইসলাম নারীকে কেবল শারীরিক নিরাপত্তাই দেয়নি, বরং সামাজিক মর্যাদা ও সম্মানও নিশ্চিত করেছে।
৫. যৌন হয়রানি প্রতিরোধ : ইসলামে পর্দার বিধান রয়েছে, যা নারী ও পুরুষ উভয়ের চরিত্র রক্ষায় সহায়ক। পাশাপাশি ধর্ষণ ও হয়রানির মতো অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান দেওয়া হয়েছে।
সাধারণ আলেম সমাজ মনে করে, ধর্ষণসহ সব ধরনের যৌন সহিংসতা প্রতিরোধে শরিয়া আইনের যথাযথ প্রয়োগ অপরিহার্য। এ কারণে তারা দেশের ইন্টেরিম সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন, ব্যভিচারের শাস্তি হিসেবে শরিয়া আইন প্রয়োগ করে এই অপরাধের উপযুক্ত শাস্তি বিধান করতে হবে।
সাধারণ আলেম সমাজের মতে, শরিয়া আইনের বাস্তবায়নই পারে সমাজকে ধর্ষণমুক্ত করতে। ইসলামি বিধান মেনে চলার মাধ্যমেই নারী-পুরুষের সম্মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে এবং সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।