গত শনিবার ভারতের হরিদ্বারে রিশিকুল আয়ুর্বেদিক কলেজে মুসলিম শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে ইফতার পার্টির আয়োজন কালে একদল উগ্র হিন্দুত্ববাদী বজরং দল কর্মী হামলা চালিয়েছে। কলেজের মুসলিম শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে ইফতার আয়োজন করছিলেন, যা তাদের সাংবিধানিক ও ধর্মীয় অধিকার। কিন্তু বজরং দলের কর্মীরা সেখানে গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে এবং এই আয়োজনকে মুসলিমদের ধর্মীয় প্রোপাগান্ডা বলে অপপ্রচার চালায়।
বজরং দলের নেতা অমিত কুমার দাবি করেন, এই ইফতার আয়োজনের মাধ্যমে বহিরাগতদের কলেজে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং এটি হরিদ্বারের ধর্মীয় পরিবেশ নষ্টের চেষ্টা। যদিও বাস্তবে ইফতার মুসলিমদের ধর্মীয় ঐতিহ্যের অংশ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ধর্মের শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ ধর্মীয় রীতিনীতি পালনের অধিকার রাখেন।
এদিকে কলেজের পরিচালক ডি সি সিংহ জানান, শিক্ষার্থীরা ইফতার আয়োজনের জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়নি। তবে অনুমতির অজুহাত দেখিয়ে মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের ঘটনাকে সমর্থন করা যায় না। কলেজ প্রশাসন ঘটনাটি খতিয়ে দেখার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
এই ঘটনায় বজরং দলের কর্মকাণ্ড নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরে মুসলিমদের ধর্মীয় অধিকার খর্ব করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। একদিকে যখন ভারত ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রের দাবিদার, তখন এ ধরনের সাম্প্রদায়িক হামলা দেশটির সংবিধানবিরোধী মানসিকতাকে প্রকাশ করে।
এদিকে পুলিশ বজরং দলের কর্মীদের শান্ত করার চেষ্টা করলেও তারা ভবিষ্যতে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়ে গেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতে সংখ্যালঘুদের ওপর ক্রমাগত বাড়তে থাকা এই ধরনের উগ্রতা ও ধর্মীয় বৈষম্য নিয়ে উদ্বেগ যেন বেড়েই চলেছে।
সূত্র: এম এম