উত্তর প্রদেশে ভার্সিটিতে নামাজ পড়ায় শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার, প্রতিবাদে আরো ছয়জনকে আটক

উত্তর প্রদেশে ভার্সিটিতে নামাজ পড়ায় শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার, প্রতিবাদে আরো ছয়জনকে আটক
উত্তর প্রদেশে ভার্সিটিতে নামাজ পড়ায় শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার, প্রতিবাদে আরো ছয়জনকে আটক। ছবি: সংগৃহীত

উত্তর প্রদেশের মিরাঠে আইআইএমটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নামাজ পড়ার কারণে এক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে পুলিশ আরও ছয় মুসলিম শিক্ষার্থীকে আটক করে। আটক শিক্ষার্থীরা তাদের সহপাঠী খালিদ প্রধানের মুক্তির দাবিতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করছিলেন।

প্রতিবাদে প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থী অংশ নেন এবং শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। তবে পুলিশ লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

একজন শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে হিন্দুদের পূজার আয়োজন করা হয়, তখন তাদের কিছু বলা হয় না। অথচ রমজানে রোজাদার মুসলিম শিক্ষার্থীদের সাথে এমন আচরণ করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিক্ষোভকে ‘অবৈধ’ আখ্যা দিয়েছে। কারণ, এর জন্য কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি!

শিক্ষার্থী নেতা শান মোহাম্মদ অভিযোগ করেন, পুলিশ আলোচনার নামে শিক্ষার্থীদের থানায় ডেকে নিয়ে গিয়ে তাদের আটক করেছে। এই বিক্ষোভের সূত্রপাত হয় একটি ইনস্টাগ্রাম ভিডিওর মাধ্যমে, যেখানে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নামাজ পড়তে দেখা যায়। ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর মুসলিমদের বিরুদ্ধে অনলাইন ও অফলাইন বিদ্বেষমূলক প্রচারণা শুরু হয়।

২২ বছর বয়সী খালিদ প্রধানকে ১৩ মার্চ নামাজের ভিডিও প্রকাশের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। ওইদিন প্রায় ৫০জন শিক্ষার্থী একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছিলেন। এই ঘটনার একদিন পর হোলি উৎসব ছিল, যা নিয়ে হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলো অভিযোগ তোলে, ভিডিওটি সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির জন্য করা হয়েছে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ খালিদসহ তিনজন নিরাপত্তাকর্মীকে বরখাস্ত করে এবং প্রশাসনকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানায়।

পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) রাকেশ কুমার মিশ্র বলেন, হোলির সময় ভিডিওটি ছড়ানোয় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার আশঙ্কা দেখা দেয়। সার্কেল অফিসার (সদর দেহাত) শিব প্রতাপ সিং জানান, ভিডিওটি ছড়ানোর অভিযোগে খালিদকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

এদিকে গত শুক্রবার গঙ্গা নগর থানায় স্থানীয় কার্তিক হিন্দুর অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও খালিদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। মামলা ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৯ ধারা ও তথ্য প্রযুক্তি (সংশোধনী) আইন, ২০০৮-এর আওতায় রুজু করা হয়েছে, যা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার উদ্দেশ্যে করা কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়।

আইআইএমটি গ্রুপের মিডিয়া ইনচার্জ সুনীল শর্মা জানান, তদন্তে দেখা গেছে, নামাজ খোলা জায়গায় পড়া হয়েছিল এবং ভিডিওটি সম্প্রচারের ফলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘ্নিত হতে পারত।

পুলিশ সুপার মিশ্র বলেন, শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভের জন্য কোনো অনুমতি নেয়নি তাই তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ সমাবেশের অভিযোগ আনা হয়েছে।

আমাদের ফলো করুন