মায়ানমারের সামরিক সরকার জান্তার নৌবাহিনী আরাকান রাজ্যের রাজধানী সিত্তের নিকটবর্তী ‘পাউকতাউ’ শহরে ২৩ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে ‘কিয়াউকতাউ’ থেকে ফেরার পথে তাদেরকে আটক করা হয় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।
এক সূত্রে জানা যায়, গত ৫ মার্চ এই রোহিঙ্গা দলটি ‘কিয়াউকতাউ’ সফর করে। সন্ত্রাসী আরাকান আর্মি তাদেরকে সপ্তাহে একবার প্রয়োজনীয় পণ্য কেনার জন্যঅনুমতি দিয়ে থাকে। তবে সামরিক বাহিনী জান্তার অবরোধের কারণে তারা ‘কিয়াউকতাউ’-তে যাওয়ার জন্য আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকা ‘ম্রক ইউ’ শহর হয়ে যেতে বাধ্য হয়।
ফেরার পথে ‘কিয়াউকতাউ’ শহরে সাম্প্রতিক বিমান হামলার কারণে তাদের বিকল্প পথে যেতে হয়। ৭ মার্চ যখন তারা সিত্তের নিকটবর্তী হয়, তখন সামরিক বাহিনী জান্তার নৌবাহিনী তাদের আটক করে। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের সাথে আরাকান আর্মির সাথে কোন সম্পর্ক আছে কিনা তা যাচাই করা হয়।
‘পাউকতাউ’-এর এক বাসিন্দা জানান, ‘এই লোকগুলো শুধুমাত্র নিজেদের গ্রামের জন্য খাদ্য ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সংগ্রহ করতে গিয়েছিল। আরাকান আর্মি তাদের অনুমতিও দিয়েছিল। তবুও সামরিক বাহিনী জান্তা তাদের আটক করেছে। এটি স্পষ্টতই রোহিঙ্গাদের প্রতি দমনমূলক আচরণ।’
অপর এক সূত্র জানায়, ‘সামরিক বাহিনী জান্তা মাসের পর মাস রোহিঙ্গাদের কাছে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর ওপরও অবরোধ দিয়ে রেখেছে। তাই তারা বিকল্প পথ খুঁজতে বাধ্য হয়। এখন সেই বিকল্প ব্যবস্থাও অপরাধ হিসেবে গণ্য হচ্ছে। এসব নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিকদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া উচিত।’
‘পাউকতাউ’, ‘ম্রক ইউ’, ‘বুনাগিউন’ ও ‘রাথেদাউং’-এর বহু সংখ্যক রোহিঙ্গা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সংগ্রহের জন্য ‘কিয়াউকতাউ’-এর ওপর নির্ভরশীল। সেখানে ভারত থেকে ‘পালেতওয়া’ হয়ে পণ্য সরবরাহ করা হয়।
এই ধরপাকড় আরও একবার প্রমাণ করে যে, বেসামরিক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে সংঘাত ও সামরিক নিপীড়নের মধ্যে আটকে পড়েছে। সামরিক বাহিনী জান্তার দমন-পীড়ন রোহিঙ্গাদের জীবনযাত্রাকে আরও কঠিন করে তুলছে এবং তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণের পথও সংকুচিত করে দিচ্ছে।
সূত্র: এএনএ







