মংডু থেকে ৭০ অধিক রোহিঙ্গা পরিবারকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ আরাকান আর্মির

মংডু থেকে ৭০ অধিক রোহিঙ্গা পরিবার জোরপূর্বক উচ্ছেদ আরাকান আর্মির
মংডু থেকে ৭০ অধিক রোহিঙ্গা পরিবার জোরপূর্বক উচ্ছেদ আরাকান আর্মির। ছবি: সংগৃহীত

মায়ানমারের আরাকান রাজ্যের মংডু শহরের উত্তরের মিয়াও টাউং গ্রাম থেকে ৭০টির বেশি রোহিঙ্গা পরিবারকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করেছে সন্ত্রাসী আরাকান আর্মি। গত বছরের জুলাই মাসে এই উচ্ছেদের পর এসব পরিবার কঠিন মানবেতর জীবনযাপন করছে।

উচ্ছেদের পর পরিবারগুলো পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতে আশ্রয় নেয়। তারা ভেবেছিল—এই পরিস্থিতি সাময়িক। কিন্তু সন্ত্রাসী আরাকান আর্মি তাদের নিজ গ্রামে ফিরে যেতে বাধা দেয়। ফলে তারা এখনো কোনো স্থায়ী আশ্রয় পায়নি এবং মৌলিক সহায়তা থেকেও বঞ্চিত রয়েছে।

রোহিঙ্গা নিউজ এজেন্সির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসী আরাকান আর্মি শুধু তাদের ফেরার পথ বন্ধ করেনি, বরং তাদের ফেলে আসা জমি ও সম্পত্তিও দখল করেছে। পুরো মিয়াও টাউং গ্রামসহ আশপাশের কৃষিজমি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে তারা।

একটি সূত্র জানিয়েছে, সন্ত্রাসী আরাকান আর্মি এই বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য আনুষ্ঠানিক বাসিন্দা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার নথিও প্রদান করেনি। ফলে তাদের আইনি অধিকার পুরোপুরি খর্ব হয়েছে।

এক রোহিঙ্গা শরণার্থী বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন কোনো রকমে টিকে আছি। খাবারের তীব্র সংকট রয়েছে, আর জীবিকা অর্জনের কোনো উপায় নেই।’

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর মংডু শহর দখলের পর থেকে সন্ত্রাসী আরাকান আর্মি সেখানে কঠোর নিয়ন্ত্রণ চালাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করেছে, চেকপোস্ট বসিয়েছে এবং খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সংগ্রহের ক্ষেত্রেও বাধা সৃষ্টি করছে।

এছাড়া রোহিঙ্গাদের দোকান, গবাদিপশু ও শস্যের ওপর উচ্চ কর বসিয়েছে তারা। এমনকি স্থানীয়দের যানবাহনও আটক করে পরে মুক্তির জন্য মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করছে। তাদের ছবি ও তথ্য সংগ্রহ করে কঠোর নজরদারি চালাচ্ছে, পাশাপাশি জোরপূর্বক রোহিঙ্গাদের নিজেদের বাহিনীতে যোগ দিতে বাধ্য করছে।

এই সংকটের ফলে উচ্ছেদ হওয়া রোহিঙ্গা পরিবারগুলো এখনো দুঃসহ জীবনের মধ্যে রয়েছে এবং কোন আন্তর্জাতিক সহায়তাও পাচ্ছে না।

আমাদের ফলো করুন