মগ সন্ত্রাসী আরাকান আর্মি পশ্চিম মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের বুথিডং শহরে রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক উচ্ছেদের অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এবার তারা নতুন করে আরও দুটি গ্রাম খালি করার নির্দেশ দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে রোহিঙ্গা নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, বুথিডংয়ের ভিটোয়া ও জাদি ভারা গ্রামের রোহিঙ্গারা বাড়িঘর ছাড়ার নির্দেশ পেয়েছেন। তবে রমজান মাসের কথা বিবেচনায় সময়সীমা এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সরে না গেলে শক্তি প্রয়োগের হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
এই দুটি গ্রামে চারটি মসজিদ ও ছয়টি মাদরাসা রয়েছে, যেগুলো এখন ধ্বংসের মুখে। উচ্ছেদ হওয়া বাসিন্দারা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে সিন কুইন পিয়ার ও গুটার পিন গ্রামে চলে যাচ্ছেন।
বিগত কয়েক মাস ধরে বুথিডংয়ে রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদ প্রক্রিয়া চলছে। এর ফলে হাজার হাজার মানুষ ঘরছাড়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত যেসব গ্রাম আক্রান্ত হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে—
ভিটোয়া, জাদি ভারা, বিন শাই (লাম্পা বিল), কিয়াউক মাউ তাউং উত্তর (শাও দুর ভারা), কিয়াউক মাউ তাউং দক্ষিণ (হাদিম ভারা), দা পিউ চুং (দাবুরোনিয়ুং), বুলি তাউং (মাওনা ভারা), মাউং গি তাউং (শাহ বাজার), অং লান পিন (মৌরিসা বিল ও উলি বার ভারা), থারি কুনি তান (শেরি খুনা), মাউং হ্লামা (রাং ভারা), নগা/কিন তাউক, বহদানা, কুমি খালি, মি কিউন কুন হসুই, কুন তান, লুং চুং (রোসানা বিল), ওরিয়া ভারা, বাজার ভারা, ইন ন্গিত থাই (কিয়া জিংগিয়া ভারা), পিয়ার পিন ইয়িন (সিতুর ভারা), হতান শাও খান (হুলিয়া সেরি), রোয়া নিও তাউং (রাংগিয়া তাউং মধ্য), ফোরনি বাশা, রাংগিয়া তাউং দক্ষিণ, কন্টিন গ্রাম অঞ্চল, থারা কিনো (থারা কুনি)।
এদিকে চলতি মাসে বুথিডংয়ে রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে ব্যাপক নির্যাতন চালানো হয়েছে। সন্ত্রাসী আরাকান আর্মি ইতোমধ্যে উচ্ছেদ হওয়া রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়িতে বৌদ্ধ রাখাইন জনগোষ্ঠীর সদস্যদের পুনর্বাসন করেছে। অন্তত আটটি গ্রাম থেকে হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে উচ্ছেদ করার পরিকল্পনা চলছে। তাদের অন্য গ্রাম বা অস্থায়ী শিবিরে পাঠানো হতে পারে।
এছাড়া অন্তত তিনটি রোহিঙ্গা গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ৫০০টির বেশি ঘরবাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বুথিডংয়ে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন নতুন নয়। কয়েক মাস ধরে সন্ত্রাসী আরাকান আর্মি একের পর এক গ্রাম উচ্ছেদ করছে, যার ফলে হাজার হাজার মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। রোহিঙ্গারা নিজেদের বাড়িঘর হারিয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। একদিকে রমজান মাস, অন্যদিকে এই জুলুম—মানবিক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে।
স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ ছাড়া রোহিঙ্গাদের এই দুর্দশা বন্ধ হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই।
সূত্র: এএনএ







