ভারতের কানপুরে উগ্র হিন্দুত্ববাদী কর্তৃক মুসলিমদের দোকানে ভাঙচুর, লুটপাট

ভারতের কানপুরে উগ্র হিন্দুত্ববাদী কর্তৃক মুসলিমদের দোকানে ভাঙচুর, লুটপাট
ভারতের কানপুরে উগ্র হিন্দুত্ববাদী কর্তৃক মুসলিমদের দোকানে ভাঙচুর, লুটপাট। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের উত্তরপ্রদেশের কানপুরে রামনবমীর শোভাযাত্রার সময় মিথ্যা গুজবের আশ্রয় নিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে উগ্র হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসনের আরেকটি চিত্র উঠে এসেছে। মুসলিমদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিজেপি ও আরএসএসের কর্মীরা উসকানিমূলক স্লোগান দিতে দিতে মুসলিম মালিকানাধীন দোকানপাটে ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে।

ঘটনার সময়কার ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, গেরুয়া পতাকা হাতে শতাধিক হিন্দুত্ববাদীর একটি দল মুসলিম দোকানে হামলা চালাচ্ছে। শুধু ভাঙচুরই নয়, হামলাকারীরা দোকানের মালামাল লুট করে প্রকাশ্যে নিয়ে যাচ্ছে। হামলাকারীদের অনেকেই হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের পরিচিত মুখ।

কানপুর পুলিশের ডেপুটি কমিশনার শ্রবণ কুমার সিংহ আজ বুধবার নিশ্চিত করেছেন, পাথর ছোঁড়ার অভিযোগ ছিল সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তিনি বলেন, ‘তদন্তে দেখা গেছে, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। কে বা কারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই গুজব ছড়াল, তা আমরা খতিয়ে দেখছি।’

পুলিশ এ পর্যন্ত বিজেপির নেতা ও আরএসএস কর্মীসহ ২০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ছাড়া অজ্ঞাত পরিচয় আরও অনেকের বিরুদ্ধেও মামলা করা হয়েছে। হামলার পরিকল্পনা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।

উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেস এই নৃশংস ঘটনার জন্য সরাসরি যোগী সরকারের ‘সাম্প্রদায়িক রাজনীতি’কে দায়ী করেছে। দলটি তাদের এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছে, ‘কানপুরে রামনবমীর শোভাযাত্রার সময় কিছু হিন্দুত্ববাদী সংগঠন মুসলিমদের বিরুদ্ধে পাথর নিক্ষেপের মিথ্যা অভিযোগ তুলেছিল। পুলিশি তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। একই সাথে প্রকাশ্যে এসেছে আরও একটি ভিডিও। যেখানে দেখা যায়, শোভাযাত্রার সময় মুসলিমদের দোকানে পরিকল্পিতভাবে ভাঙচুর চালানো হচ্ছে।’

এদিকে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম হিন্দুস্তানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রামনবমী শোভাযাত্রা কেন্দ্র করে কানপুরের গগনগঞ্জ, মোলগঞ্জ, চাকেরি, পাঁকি–সহ বিভিন্ন এলাকায় একাধিক মামলা হয়েছে। ডিজে গান বাজানো নিয়ে অনুমতির শর্ত ভঙ্গ, উসকানিমূলক স্লোগান, গুজব ছড়ানো ও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরির অভিযোগে পুলিশ মোট ৯টি মামলা করেছে। পুলিশ এমন একজন ইউটিউবারের খোঁজ করছে, যিনি এই গুজবের সূত্রপাত ঘটিয়েছেন বলে সন্দেহ।

উগ্র হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির ছত্রছায়ায় এই হামলা ভারতের ধর্মীয় সহনশীলতার উপর সরাসরি আঘাত। কানপুরের ঘটনা আবারও প্রমাণ করল, কট্টরপন্থার রাজনীতি দেশের সামাজিক শান্তি ও সম্প্রীতির বড় শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আমাদের ফলো করুন