ভারতের আসাম রাজ্যে মুসলিমদের ধর্মীয় সম্পত্তি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ওয়াকফ (সংশোধনী) আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে শিলচরসহ পুরো কাছাড় জেলা। গতকাল সোমবার শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পুলিশের লাঠিচার্জ ও সংঘর্ষের ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে রাজ্যের মুসলিম জনগণের মধ্যে।
ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাবিত সংশোধন মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে। আন্দোলনকারীরা মনে করছেন, এই সংশোধনের মাধ্যমে মুসলিমদের ধর্মীয় সম্পদ ও প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর হস্তক্ষেপ করতে চাইছে সরকার।
সোমবার বিকেলে শিলচরের বেরেঙ্গা এলাকায় কয়েক শত মুসলিম নাগরিক ওয়াকফ আইন বাতিলের দাবিতে কালো পতাকা হাতে নিয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ শুরু করেন। তবে পূর্বানুমতির অজুহাতে পুলিশ রাস্তা অবরোধ তুলে দিতে গেলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
স্থানীয় এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভিড় সরাতে গেলে কিছু লোক পুলিশের দিকে ঢিল ছোঁড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ হালকা লাঠিচার্জ করে।
অথচ প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, পুলিশ কোন উসকানি ছাড়াই হামলা চালায়। অনেক বয়স্ক ও নারী আন্দোলনকারীও পুলিশের আক্রমণের শিকার হন। আন্দোলনকারীরা বলছেন, ধর্মীয় অধিকারের প্রশ্নে এ ধরনের পুলিশি আচরণ সংবিধানবিরোধী ও অমানবিক।
এ ঘটনার পর কাছাড় জেলা প্রশাসন ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (BNSS)-এর ১৬৩ ধারার অধীনে জেলাজুড়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এখন থেকে পাঁচজন বা ততোধিক মানুষের জমায়েত, অস্ত্র বহন এবং পূর্বানুমতি ছাড়া ধর্মঘট, বিক্ষোভ, মিছিল, সমাবেশ আয়োজন সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে মুসলিম নেতারা বলছেন, এ আদেশ মূলত সংখ্যালঘুদের কণ্ঠরোধের কৌশল।
বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, এই আইন শুধুমাত্র মুসলিমদের ধর্মীয় অধিকার ও সম্পত্তির উপর আঘাত নয়; বরং তাদের অস্তিত্বের ওপরও হুমকি। তাই গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক উপায়েই তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।







