মিয়ানমারের কাচিনে এক সপ্তাহে দুই শতাধিক বিমান হামলা, বহু হতাহত

মিয়ানমারের কাচিনে এক সপ্তাহে দুই শতাধিক বিমান হামলা, বহু হতাহত
মিয়ানমারের কাচিনে এক সপ্তাহে দুই শতাধিক বিমান হামলা, বহু হতাহত। ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারের কাচিন রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় মাত্র এক সপ্তাহে ২০০-র বেশি বিমান হামলা চালিয়েছে জান্তা বাহিনী। এর মধ্যে রয়েছে যুদ্ধবিমান, ড্রোন এবং পরিবহন বিমান থেকে পরিচালিত হামলা। গত ১৩ই এপ্রিল এক বিবৃতিতে কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মি (KIA) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

বিবৃতিতে জানানো হয়, সেনাবাহিনী ১১টি বিমান হামলা চালিয়েছে। ১৩৪টি Y-12 পরিবহন বিমানে টহলসহ ৬৭টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এছাড়া স্থল অভিযানও পরিচালনা করেছে বাহিনীটি। এসব হামলার পাশাপাশি সংঘর্ষপূর্ণ এলাকাগুলোতে ভারী আর্টিলারি ব্যবহার করে ২৭৪টি হামলা চালানো হয়েছে।

এই হামলায় বেসামরিক নাগরিক এবং যোদ্ধাদের মধ্যে বেশ হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে বলে জানানো হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সংখ্যা প্রকাশ করেনি বিদ্রোহী গোষ্ঠি KIA।

এদিকে ‘মিয়ানমার নাও’ অনলাইন পোর্টাল জানিয়েছে, ১৩ই এপ্রিল সকালে হপাকান্ত শহরের নিকটবর্তী খুন সাই ইয়ান গ্রামে সেনাবাহিনীর হামলার পর ওই এলাকায় তীব্র সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। বিদ্রোহীদের একটি স্থানীয় সূত্র জানায়, আগে আমরা লোয়ার এলাকায় তাদের ওপর আক্রমণ করেছিলাম। এবার তারা নিজেরাই হামলা চালিয়েছে। এখনো গ্রামটির আশপাশে সামরিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

১১ই এপ্রিল KIA-এর ২৬ নম্বর ব্যাটালিয়নের অধীনে ইন তাউ জি এলাকায় ও বামো শহরে লড়াই শুরু হয়। বামো শহরে KIA বিদ্রোহী গোষ্ঠিটি জান্তা বাহিনীর অধিকাংশ ঘাঁটি দখল করে নেয়। তবে শহরটিতে বিমান হামলা এখনো বন্ধ হয়নি।

চলতি মার্চ মাস থেকে KIA কাচিন ও শান রাজ্যের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শহর ও এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে: মাবাইন, সোয়ানব্রা পম, ইনজিন ইয়ান, সাদোন, চিফোই, সুলো, ফিমো, প্যানওয়া, দোত ফন ইয়ান, সিনবো, মিয়ুলি, মানসি, কানবাইতি, মোমাউক এবং লোগি বাণিজ্যিক বন্দর।

উল্লেখ্য, ২৮শে মার্চের বিধ্বংসী ভূমিকম্পে মিয়ানমারে প্রায় ৮,৭০০ জন হতাহত ও নিখোঁজ হন। এরপর সামরিক সরকার ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো ২২ এপ্রিল পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলেও বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি; বরং সামরিক সরকার বিমান হামলা, গোলাবর্ষণ ও সামরিক অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

৫ই এপ্রিল বিরোধী ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (NUG) জানায়, ভূমিকম্পের পরের সপ্তাহেই মিয়ানমার সেনাবাহিনী দেশের বিভিন্ন এলাকায়, এমনকি আরাকান রাজ্যেও ৬৩টি বিমান ও আর্টিলারি হামলা চালিয়েছে। এতে অন্তত ৬৮ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। যাদের মধ্যে ছিল একজন শিশু ও ১৫ জন নারী।

আমাদের ফলো করুন