বিহারে বোরকার আড়ালে মদ পাচার দুই হিন্দু নারীর, ধর্মীয় পোশাকের অপব্যবহারে ক্ষুব্ধ মুসলিমগণ

বিহারে বোরকার আড়ালে মদ পাচার দুই হিন্দু নারীর, ধর্মীয় পোশাকের অপব্যবহারে ক্ষুব্ধ মুসলিমগণ
বিহারে বোরকার আড়ালে মদ পাচার দুই হিন্দু নারীর, ধর্মীয় পোশাকের অপব্যবহারে ক্ষুব্ধ মুসলিমগণ। ছবি : সংগৃহীত

ভারতের বিহারের কাটিহার জেলার মানিয়া রেলওয়ে স্টেশনে চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। বোরকা পরে গর্ভবতী নারীর অভিনয় করে মদ পাচারের সময় ধরা পড়েছেন দুই হিন্দু নারী। এ ঘটনায় একদিকে যেমন বিহারের দীর্ঘদিনের মদ নিষিদ্ধ আইনের ব্যর্থতা উঠে এসেছে, তেমনি ধর্মীয় পোশাকের অপব্যবহার ও সামাজিক দ্বৈতমানদণ্ড নিয়েও শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক।

পশ্চিমবঙ্গ থেকে মদ এনে বিহারে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন পিপরাধরি টোলার বাসিন্দা বীণা দেবী ও নন্দিনী কুমারী। তারা শাড়ির ওপর বোরকা পরে নিজেকে গর্ভবতী নারী সাজিয়ে শরীরের সাথে টেপের সাহায্যে রেখেছিলেন বিদেশি ব্র্যান্ডের টেট্রা প্যাকজাত মদ। বীণার কাছে ৯ লিটার এবং নন্দিনীর কাছে ৮.১ লিটার মদ পাওয়া গেছে।

গোপন সূত্রের খবরের ভিত্তিতে আবগারি দফতরের একটি বিশেষ দল অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। আবগারি সুপারিনটেনডেন্ট সুভাষ কুমার সিং জানান, এই পাচারচক্রকে ধরার জন্য রেলপথ ও নদীপথে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এদের পরিকল্পনা চতুর ছিল। কিন্তু আইনকে ফাঁকি দেওয়ার জন্য তা যথেষ্ট নয়।

এই ঘটনার পর ধর্মীয় পোশাক নিয়ে সমাজের ভণ্ডামি প্রকাশ্যে এসেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। পাটনার নারী অধিকারকর্মী জেবা খান বলেন, ‘মুসলিম নারীরা যখন বোরকা পরেন, তখন তাঁদের ‘পিছিয়ে পড়া’ বা ‘উগ্রপন্থী’ বলে কটাক্ষ করা হয়। অথচ হিন্দু নারীরা বোরকার অপব্যবহার করলে কেউ মুখ খোলে না। এটা নিখাদ ভণ্ডামি।’

স্থানীয় বাসিন্দা ফাইজান আহমেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ধরুন এই কাজ যদি মুসলিম নারীরা করতেন, তাহলে গোটা দেশ তোলপাড় হয়ে যেত। কিন্তু এখন সবাই চুপ! কারণ তারা হিন্দু।’

ধর্মীয় পোশাকের অপব্যবহার একদিকে যেমন ইসলামি প্রতীকের অবমাননা, তেমনি অন্যদিকে মুসলিম নারীদের প্রতি বিদ্বেষকে আরও উস্কে দেয়। কাটিহারের এই ঘটনা শুধু ভারতের আইনি নয়; বরং ধর্ম, লিঙ্গ ও সামাজিক ন্যায়ের জটিল ও গভীর প্রশ্নের সামনে আমাদের দাঁড় করিয়ে দেয়।

আমাদের ফলো করুন