বাংলাদেশে উগ্র হিন্দুত্ববাদকে বৈধতা দেওয়ার অভিযাত্রায় জামায়াতে ইসলামীর সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড আর কেবল গুজবের স্তরে নেই। সন্তোষ শর্মার মতো বিতর্কিত ভারতীয় চরকে দলীয় অনুষ্ঠানে হাজির করার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আরও বিস্ফোরক তথ্য সামনে এসেছে। এবার সরাসরি দলটির শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে উঠেছে ভারতের সঙ্গে গোপন আঁতাতের অভিযোগ।
বিশ্বস্ত সূত্রের বরাতে জানা গেছে, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সম্প্রতি বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে গিয়েছিল। সেখানেই ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে বসে দলটি। বৈঠকে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সম্পন্ন হয়, যেগুলোর সারসংক্ষেপ নিচে তুলে ধরা হলো—
১. জামায়াত পরিচালনার জন্য ভারতের পক্ষ থেকে একজন নির্দিষ্ট ‘হ্যান্ডলার’ নিয়োগ করা হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই দায়িত্ব পেয়েছেন সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, শিশির মোহাম্মদ মনির এবং চট্টগ্রামের আমীর শাহজাহান চৌধুরী। ইতোমধ্যে শাহজাহান ভারতীয় হাইকমিশনের এক প্রতিনিধির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ শুরু করেছেন।
২. ঐতিহাসিক ভারতবিরোধী অবস্থান থেকে সরে এসেছে জামায়াত— এই বার্তাও তারা বৈঠকে স্পষ্টভাবে দিয়েছে।
৩. ভারতের নির্দেশে বাংলাদেশে ইসলামপন্থী ও তথাকথিত ‘এক্সট্রিমিস্ট’ ভাবা হয় এমন যেকোনো সংগঠনকে দমন করবে জামায়াত, বিশেষত যারা পাকিস্তানপন্থী হিসেবে পরিচিত।
৪. ১৯৭১ সালের যুদ্ধকালীন জামায়াত নেতাদের অবস্থানকে ‘ভুল’ হিসেবে স্বীকার করে দলটি জানিয়েছে, তারা সে সময়কার ভুলের জন্য লজ্জিত এবং এখন ভারতকে ‘বন্ধু রাষ্ট্র’ হিসেবে মেনে নিয়েছে।
এই গোপন বৈঠকের প্রতিফলনই প্রকাশ পেয়েছে সম্প্রতি সন্তোষ শর্মাকে জামায়াতের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানোর মধ্য দিয়ে। ভারতীয় গোয়েন্দাদের ঘনিষ্ঠ এই ব্যক্তিকে মঞ্চে তোলার মধ্য দিয়ে দলটি কার্যত তাদের ভারতবিরোধী অবস্থান থেকে সম্পূর্ণ সরে আসার ঘোষণা দিয়েছে।
তবে প্রশ্ন থেকেই যায়— কে এই সন্তোষ শর্মা? তাঁর সঙ্গে জামায়াতের অতীত সম্পর্কের ইতিহাসই বা কেমন?
এই সন্তোষ শর্মার নাম জড়িয়ে আছে একাধিক আলোচিত নির্যাতন ও হত্যার ঘটনায়। তার প্রত্যক্ষ মদদেই মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী থেকে শুরু করে মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীসহ বহু জামায়াত নেতাকে ‘শহিদ’ করা হয়। এছাড়াও অগণিত আলেম-ওলামা ও ইসলামি ব্যক্তিত্বকে রিমান্ডে নিয়ে নির্মম নির্যাতনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি।
আজ সেই ব্যক্তি জামায়াতের মঞ্চে? শহিদদের রক্তের কসম খাওয়া দলটির এই অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলছে সাধারণ কর্মী থেকে শুরু করে মুসলিম জনতা পর্যন্ত।
বিশ্বস্ত সূত্রগুলো জানিয়েছে, জামায়াতের ভেতরে এমন বহু নেতা রয়েছেন যারা ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়নে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। এখনই তাদের পরিচয় প্রকাশ করা না হলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে— দলটি যদি এই বিশ্বাসঘাতক অবস্থান থেকে না সরে আসে, তাহলে দেশের মুসলিম জনতার স্বার্থে তাদের নাম-পরিচয় ও প্রমাণ সামনে আনা হবে।
এই ঘটনাকে শুধু রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ইঙ্গিত হিসেবে দেখা যাবে না, বরং এটা বাংলাদেশের ইসলামী ভাবধারা ও চেতনার উপর এক অশনি সংকেত।
নিউজনেস্ট ডেস্ক
- নিউজনেস্ট ডেস্ক#molongui-disabled-link
- নিউজনেস্ট ডেস্ক#molongui-disabled-link
- নিউজনেস্ট ডেস্ক#molongui-disabled-link
- নিউজনেস্ট ডেস্ক#molongui-disabled-link