পেহেলগামের হামলাকে কেন্দ্র করে উত্তর ভারতের অন্তত তিনটি রাজ্যে কাশ্মীরি মুসলিম শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও হুমকির অভিযোগ উঠেছে। পাঞ্জাব, হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে অন্তত আটটি পৃথক ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মারধর, হোস্টেলে হামলা এবং রাজ্য ছেড়ে চলে যাওয়ার আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে।
উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনে কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ‘হিন্দু রক্ষা দল’ কাশ্মীরি মুসলিম শিক্ষার্থীদের খোলাখুলি হুমকি দিয়ে বলেছে, যদি কাশ্মীরি মুসলিম ছাত্ররা বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার মধ্যে রাজ্য না ছাড়ে, তাহলে তাদের এক এক করে তুলে নেওয়া হবে।
কাশ্মীরি শিক্ষার্থীদের সংগঠন জম্মু-কাশ্মীর স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (JKSA) জানিয়েছে, এই সহিংসতার সূত্রপাত হয়েছে পেহেলগামে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এক আকস্মিক হামলার পর থেকে। তারা বলছে, এসব ঘটনা নিছক বিচ্ছিন্ন নয়, বরং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ঘৃণার অংশ।
JKSA-র জাতীয় সমন্বয়ক নাসির খুয়েহামী বলেন,‘কাশ্মীরি ছাত্রদের হোস্টেলের দরজা ভেঙে ঢুকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কেউ কেউ প্রাণভয়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে এটা ভয়ানক পরিণতি ডেকে আনবে।’
কাশ্মীরিদের টার্গেট করে মারধর
হিমাচল প্রদেশের কাংড়া জেলার আর্নি বিশ্ববিদ্যালয়ে কাশ্মীরি ছাত্রদের হোস্টেলে ঢুকে তাদের ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলে গালাগালি করা হয়। শিক্ষার্থীদের ভাষ্য অনুযায়ী, স্থানীয় কিছু লোক হোস্টেলের দরজা ভেঙে ফেলে এবং তাদের বের করে দেওয়ার চেষ্টা চালায়।
এদিকে উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনের BFIT কলেজের অন্তত ২০ জন ছাত্র বুধবার রাতেই পালিয়ে যান জলি গ্রান্ট বিমানবন্দরের দিকে। দেরাদুনের রাস্তায় তাদের উদ্দেশে স্লোগান দেওয়া হয়, কাশ্মীরি মোল্লা, ফিরে যাও।
চণ্ডীগড়ে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা
পাঞ্জাবের ডেরাবাসিতে ইউনিভার্সাল গ্রুপ অব ইনস্টিটিউশনস-এর হোস্টেলে বুধবার রাতে হামলার ঘটনা ঘটে। ধারালো অস্ত্রসহ একদল দুর্বৃত্ত ছাত্রদের ওপর চড়াও হয়। এই সহিংসতায় একজন ছাত্র গুরুতর আহত হয়েছেন। তার জামা ছিঁড়ে দেওয়া হয়। JKSA অভিযোগ করেছে, কলেজ কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ কেউই তখন সহযোগিতা করেনি।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও আহ্বান
এই ঘটনার পর JKSA উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি দিয়েছে। একই সঙ্গে সংগঠনটি রাহুল গান্ধীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। রাহুল গান্ধী বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং সংসদে উত্থাপন করার আশ্বাস দিয়েছেন।
নাসির খুয়েহামী বলেন, ‘এটি শুধু নিরাপত্তা ব্যর্থতা নয়, বরং রাষ্ট্রীয় নীরবতায় উসকে দেওয়া একটি ভয়ংকর সাম্প্রদায়িক ঘৃণার চিত্র।’
কাশ্মীরি শিক্ষার্থীরা বর্তমানে ভয় ও অনিশ্চয়তার মধ্যে সময় পার করছেন। কেউ কেউ রাজ্য ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন, আবার অনেকে হোস্টেলেই অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। পরিস্থিতি এখনো উত্তপ্ত রয়েছে।
সূত্র: এমএম
উপমহাদেশ ডেস্ক
- উপমহাদেশ ডেস্ক#molongui-disabled-link
- উপমহাদেশ ডেস্ক#molongui-disabled-link
- উপমহাদেশ ডেস্ক#molongui-disabled-link
- উপমহাদেশ ডেস্ক#molongui-disabled-link