নিউজনেস্ট

৬ সপ্তাহে ২০০ মিলিয়ন ডলারের মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করল হুথি যোদ্ধারা!

৬ সপ্তাহে ২০০ মিলিয়ন ডলারের মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করল হুথি যোদ্ধারা!
৬ সপ্তাহে ২০০ মিলিয়ন ডলারের মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করল হুথি যোদ্ধারা!। ছবি : সংগৃহীত

ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা মাত্র ছয় সপ্তাহের ব্যবধানে যুক্তরাষ্ট্রের সাতটি এমকিউ-৯ রিপার ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে। মার্কিন সামরিক বাহিনীর হিসেবে, এই ড্রোনগুলোর মোট মূল্য ২০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি।

হুথিদের এই পাল্টা প্রতিরোধ এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সবচেয়ে বড় ক্ষতির উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে এমন এক সময় যখন ট্রাম্প প্রশাসনের নির্দেশে ইয়েমেনে প্রতিদিনের মতো বিমান হামলা চালানো হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানা গেছে, ৩১ মার্চ থেকে ২২ এপ্রিলের মধ্যে এই সাতটি রিপার ড্রোন ধ্বংস করা হয়। এর মধ্যে শুধু গত এক সপ্তাহেই তিনটি ড্রোন হারিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিটি ড্রোনের দাম প্রায় ৩০ মিলিয়ন ডলার।ড্রোনগুলো ইয়েমেনের ওপর নজরদারি বা হামলার মিশনে পাঠানো হয়েছিল। কোনোটি জলে, আবার কোনোটি স্থলভূমিতে ভেঙে পড়ে। কর্মকর্তারা বলছেন, এগুলোর বেশিরভাগই সম্ভবত হুথিদের সরাসরি হামলায় ধ্বংস হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড জানিয়েছে, তাদের বাহিনী এখন পর্যন্ত ইয়েমেনে ৮০০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে—যার মধ্যে রয়েছে হুথিদের কমান্ড সেন্টার, অস্ত্রভাণ্ডার ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এতে শত শত হুথি যোদ্ধা শহিদ হয়েছেন বলেও দাবি করা হয়েছে। যদিও এসব তথ্য স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি।

তবে এই হামলায় সাধারণ মানুষের মৃত্যু আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা Airwars জানিয়েছে, মার্চ মাসে মার্কিন হামলায় ২৭ থেকে ৫৫ জন সাধারণ মানুষ শহিদ হয়েছেন। এপ্রিলের শুরুতেই সেই সংখ্যা এরই মধ্যে ছাড়িয়ে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে হোদেইদার রাস ইসা বন্দরে—যেখানে একটি মার্কিন হামলায় অন্তত ৮০ জন নিরীহ জনগণ শহিদ হন। আহত হন আরও ১৫০ জনের বেশি। কিছুদিন পর রাজধানী সানায় আরেক হামলায় শহিদ হন ১২ জন। আহত হন ৩০ জনের বেশি।

হুথি বিদ্রোহীরা স্পষ্ট করে জানিয়েছে, তাদের লক্ষ্য মূলত ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের জাহাজগুলো, যারা বাব আল-মানদেব প্রণালী দিয়ে যাতায়াত করছে। তারা বলছে, যদি ইসরায়েল গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়, তাহলে এই হামলা বন্ধ করে দেবে।

ওয়াশিংটনে এই ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকট নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। ডেমোক্রেটিক দলের সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন, এলিজাবেথ ওয়ারেন এবং টিম কেইন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথকে চিঠি লিখে জানতে চেয়েছেন, ট্রাম্প প্রশাসন কি ইচ্ছাকৃতভাবে সাধারণ মানুষের ক্ষয়ক্ষতি কমানোর দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে?

এই প্রশ্ন উঠে এসেছে রাস ইসা বন্দরে সাধারণ মানুষ হত্যার খবর সামনে আসার পরপরই। যেই পরিস্থিতি এক নতুন যুদ্ধ নীতির ইঙ্গিত দিচ্ছে।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত