ভারতের উত্তরপ্রদেশের শ্রাবস্তী জেলায় ১০টি মাদ্রাসাকে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে সেগুলো বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন। এসব মাদ্রাসা প্রয়োজনীয় নথিপত্র দেখাতে না পারার অযুহাতে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি জেলা প্রশাসনের।
এছাড়া জেলাটির মোট ২৯৭টি মাদ্রাসার মধ্যে ১৯২টিকেই ‘অবৈধ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। এর মধ্যে প্রথম দফায় ১০টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হলো। হঠাৎ এই সিদ্ধান্তে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন অন্য মাদ্রাসাগুলোর পরিচালকরাও। হুমকির মুখে পড়েছে ভারতের ইসলামি শিক্ষাব্যবস্থা!
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নেপাল সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় ১২টি মাদ্রাসায় হানা দেয় একটি বিশেষ দল। নেতৃত্বে ছিলেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (ডিএম) অজয় কুমার। অভিযানে যেসব মাদ্রাসা বৈধতার প্রমাণ দিতে পারেনি, সেগুলো তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এই মাদ্রাসাগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘জামিয়া আবু বকর আনোয়ারুল কুরআন’। সেখানে প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছিল। এখন তাদের বাধ্য করে পাশের সরকারি স্কুলে পাঠানো হয়েছে। আরও কিছু মাদ্রাসা বন্ধ হয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েত শ্রীনগরের মাজরা রামপুরা ও ভরান্ডাহ এলাকায়।
মাদ্রাসাগুলোর হঠাৎ বন্ধ হওয়ায় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিপাকে পড়েছেন শিক্ষক ও কর্মচারীরাও। একাধিক মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে, তাদের পর্যাপ্ত সময় কিংবা পূর্বে কোনো নোটিশ দেওয়া হয়নি।
প্রশাসনের দাবি, কাগজপত্র ঠিক না থাকায় এবং ‘আইন মেনে না চলা’র অভিযোগে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের একাংশ মনে করছে, এটি নিছক প্রশাসনিক পদক্ষেপ নয়, বরং ধর্মীয় শিক্ষাব্যবস্থাকে লক্ষ্য করে একটি পরিকল্পিত অভিযান।
উল্লেখ্য, এর আগেও উত্তর প্রদেশে একাধিক মাদ্রাসা ও মসজিদকে অবৈধ স্থাপনা আখ্যা দিয়ে উচ্ছেদ বা ভাঙচুর করা হয়েছে। কখনো ‘দখলমুক্তি’, কখনো ‘রাস্তা প্রশস্তকরণ’-এর অজুহাত দেখিয়ে এই অভিযানগুলো চালানো হয়েছে, যা নিয়ে বহুবার সমালোচনার মুখে পড়েছে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি এসমস্ত বর্বরোচিত কর্মকাণ্ডের শিকার হচ্ছে শুধু মুসলিমরাই। অন্য কোন ধর্মীয় উপাসনালয়ে ’অবৈধ’ আখ্যা দিয়ে এমন ঘৃণ্য অপচেষ্টা লক্ষ্য করা যায় না।
সূত্র: এমএম







