নিউজনেস্ট

সিন্ধু নদ নিয়ে উত্তপ্ত দিল্লি-ইসলামাবাদ: শুরু হচ্ছে জলযুদ্ধ

সিন্ধু নদ নিয়ে উত্তপ্ত দিল্লি-ইসলামাবাদ: শুরু হচ্ছে জলযুদ্ধ
সিন্ধু নদ নিয়ে উত্তপ্ত দিল্লি-ইসলামাবাদ: শুরু হচ্ছে জলযুদ্ধ। ছবি: সংগৃহীত

কাশ্মীর উপত্যকায় ভারত কর্তৃক দুটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার ফলে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এক নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। ইতালীয় সংবাদমাধ্যম ‘স্কেনারি একোনোমিচি’ -তে প্রকাশিত এক বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদনে এই পরিস্থিতিকে ‘জলযুদ্ধের সূচনা’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কাশ্মীরের কিশতোয়ার অঞ্চলের ‘রাতল’ (৮৫০ মেগাওয়াট) এবং ‘দুল হাস্তি’ (৩৯০ মেগাওয়াট) জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ কার্যক্রমের গতি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্য সচিব আতল দুল্লু। এ উদ্যোগ পাকিস্তানের প্রবল আপত্তির মুখে পড়েছে। পাকিস্তান একে ১৯৬০ সালের ঐতিহাসিক ‘সিন্ধু পানি চুক্তি’র লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে।

সিন্ধু পানি চুক্তিটি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সমঝোতা ছিল, যা সিন্ধু নদ ও তার উপনদীগুলোর পানিবণ্টন সংক্রান্ত নিয়ম নির্ধারণ করেছিল। কিন্তু ২০২৫ সালের ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত এই চুক্তি কার্যত স্থগিত করার ইঙ্গিত দেয় এবং পরবর্তীতে জলপ্রকল্পগুলোতে কাজ জোরদার করে।

পাকিস্তান আশঙ্কা করছে ভারত এই প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে নদীর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে তাদের কৃষি ও জ্বালানি নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। পাকিস্তানের কৃষিকাজ, পানীয় জল ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনেকটাই এই সিন্ধু নদ পানির উৎসের ওপর নির্ভর করে।

ভারতের দাবি, এই প্রকল্পগুলো সম্পূর্ণভাবে সিন্ধু চুক্তির নির্দেশিকা অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে এবং এগুলোর উদ্দেশ্য হলো কাশ্মীর অঞ্চলের জ্বালানি ঘাটতি পূরণ ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা।✔তবে ‘স্কেনারি একোনোমিচির’ প্রতিবেদক ফ্যাবিও লুগানো মনে করেন এই বাঁধগুলো কেবল বিদ্যুৎ প্রকল্প নয়, বরং দীর্ঘস্থায়ী ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্বে ভারতীয় কৌশলের অংশ। তার মতে ভারতের আচরণ এক ধরনের জলীয় অবরোধ বা ‘ওয়াটার ব্লকেড’ গঠনের ইঙ্গিত দেয়।

লুগানো প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলেন, ভারত যদি সত্যিই পাকিস্তানের পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দেওয়ার পথ বেছে নেয়, তাহলে তা দুই দেশের মধ্যে সরাসরি যুদ্ধের সম্ভাবনাকে উসকে দিতে পারে। ইসলামাবাদ এরই মধ্যে জানিয়েছে, তারা নিজেদের জলাধিকার রক্ষায় প্রয়োজনে যুদ্ধ পর্যন্ত করতে প্রস্তুত।

কাশ্মীর কেন্দ্রিক এই নতুন জলঘটনা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে একটি গুরুতর উত্তেজনার ইঙ্গিত দিচ্ছে। যেখানে পানি অস্ত্র হয়ে উঠছে, সেখানে কূটনৈতিক সমাধান না এলে পুরো দক্ষিণ এশিয়াই এক ভয়াবহ সংকটের মুখোমুখি হতে পারে।

উপমহাদেশ ডেস্ক
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত