নিউজনেস্ট

গুজরাটে ৭ হাজারের বেশি মুসলিম ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দিল উগ্র হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন!

গুজরাটে ৭ হাজারের বেশি মুসলিম ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দিল উগ্র হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন!
গুজরাটে ৭ হাজারের বেশি মুসলিম ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দিল উগ্র হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন! ছবি: সংগৃহীত

ভারতের গুজরাটের আহমেদাবাদে চাঁন্দুলা তালাব এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার সকালে আহমদাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (AMC) পরিচালিত এক বিশাল উচ্ছেদ অভিযানে প্রায় ৭ হাজার মুসলিম ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে হাজার হাজার পরিবার এখন গৃহহীন হয়ে পড়েছে।

উচ্ছেদের সময় লোকজন প্রাণপণে ঘরের আসবাব, জামাকাপড় ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রক্ষার চেষ্টা করছিল। অনেকেই কিছুই রক্ষা করতে পারেনি। রোদে পুড়ে, খোলা আকাশের নিচে ছোট ছোট শিশু ও বৃদ্ধরা কোথায় যাবে বুঝে উঠতে পারছে না।

প্রশাসনের দাবি, এই উচ্ছেদ অভিযান ‘জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে’ চালানো হয়েছে। তারা বলছে, ২৬ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে ঘটে যাওয়া আকস্মিক হামলার পর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চাঁন্দুলা তালাব ও আশপাশের এলাকায় বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের ভাষ্য অনুযায়ী, এই এলাকায় বহু বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী অবৈধভাবে বসবাস করছিল।

এই ঘটনার পর থেকেই অন্তত ৬,৫০০ মানুষকে নাগরিকত্ব যাচাইয়ের জন্য আটক করা হয়েছে, যাদের অধিকাংশই মুসলিম। তবে মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, এদের অনেকেই ভারতীয় নাগরিক, যাদের কাছে বৈধ নথি যেমন আধার কার্ড, ভোটার আইডি রয়েছে।

গুজরাট হাইকোর্ট ২৯ এপ্রিল এই উচ্ছেদ অভিযানকে বৈধ ঘোষণা করে জানায়, চাঁন্দুলা লেকের জমিতে থাকা বসতিগুলো অননুমোদিত। আদালতের এই রায়ের পর প্রশাসন পুনরায় অভিযান শুরু করে। এর আগেই ২৮ এপ্রিল সিয়াসতনগর ও বাঙালি বাস এলাকায় ৪ হাজারের বেশি ঝুপড়ি ঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। সেই উচ্ছেদেও হাজারো দরিদ্র পরিবার গৃহহীন হয়, যাদের অনেকে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে আসা দিনমজুর ও র‍্যাগপিকার।

এই ঘটনায় ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বহু মানবাধিকার সংগঠন ও নাগরিক সমাজ দ্রুত পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছে।বর্তমানে হাজার হাজার গৃহহীন মানুষ খোলা জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে। অথচ, প্রশাসনের তরফ থেকে এখনও পর্যন্ত পুনর্বাসন নিয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।

উপমহাদেশ ডেস্ক
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত