বহু বছরের যুদ্ধ, মানবিক সংকট ও আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতার পর অবশেষে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সিরিয়ার ওপর আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আশ শাইবানি ‘একটি ঐতিহাসিক বিজয়’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার ২০শে মে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতির উচ্চ প্রতিনিধি কায়া ক্যালাস ব্রাসেলসে এক বৈঠকের পর ঘোষণাটি দেন। তিনি বলেন, ‘গত ১৪ বছর ধরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সিরিয়াবাসীর পাশে ছিল। এখন আমরা একটি শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নতুন সিরিয়া গঠনে তাদের সহায়তা করতে চাই।’
ক্যালাস আরও জানান, এই পদক্ষেপ দেশটির পুনর্গঠন ও অর্থনৈতিক পুনরুত্থানে সহায়ক হবে। ইউরোপীয় কূটনৈতিক সূত্রগুলোর বরাতে জানা যায়, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ফলে সিরিয়ার ব্যাংকগুলোর আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থায় পুনঃসংযোগ সম্ভব হবে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জব্দকৃত সম্পদগুলোও মুক্তি পাবে।
তবে সব নিষেধাজ্ঞা একযোগে তুলে নেওয়া হচ্ছে না। অস্ত্র বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং বেসামরিক দমন-পীড়নে ব্যবহৃত সরঞ্জাম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। পাশাপাশি জাতিগত উত্তেজনা উসকে দেওয়া ব্যক্তিদের ওপর ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে সিরিয়ার উপর শর্তও জুড়ে দেওয়া হয়েছে সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা এবং গণতান্ত্রিক পথে অগ্রসর হওয়ার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে হবে, অন্যথায় নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আশ শাইবানি এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘আমরা আমাদের জনগণের সঙ্গে মিলে ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে একটি নতুন ইতিহাস লিখছি। এই সিদ্ধান্ত সিরিয়ায় নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধিকে আরও জোরদার করবে।’
এর আগে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ওয়াদেফুল সিরিয়াকে একটি বাস্তব সুযোগ দেওয়ার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ইচ্ছার কথা ঘোষণা করেছিলেন।ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই ঘোষণার এক সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও সিরিয়ার ওপর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
সূত্র: আল জাজিরা
