ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সাম্প্রতিক সংঘাতে চীনের প্রত্যক্ষ ভূমিকা নিয়ে উঠেছে নতুন প্রশ্ন। ভারতের এক প্রতিরক্ষা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের দাবি, পাকিস্তান যে ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, তাতে রয়েছে চীনের প্রযুক্তিগত ও কৌশলগত সহায়তা।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়-সংশ্লিষ্ট সেন্টার ফর জয়েন্ট ওয়ারফেয়ার স্টাডিজের মহাপরিচালক অশোক কুমার জানান, পাকিস্তানের উপগ্রহ ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে চীন। তার ভাষায়, চীনের সহায়তায় পাকিস্তান রাডার পুনর্বিন্যাস করেছে। এর ফলে ভারতের বিমান চলাচল সহজেই ধরা পড়েছে।
এই ঘটনাকে নজিরবিহীন বলছেন বিশ্লেষকরা। কারণ, একরাতেই সীমান্তের ওপার থেকে ছয়টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার ঘটনা সামরিক ইতিহাসে বিরল। ঘটনার সূত্রপাত ২২ এপ্রিল, ভারতশাসিত কাশ্মীরে পাকিস্তান-সমর্থিত হামলার জেরে। এরপর পাকিস্তানের নয়টি স্থানে বিমান হামলা চালায় ভারত, যাতে নিহত হয় অন্তত ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক। ধ্বংস হয় আবাসিক ভবন, একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র ও একটি মসজিদ।
জবাবে পাকিস্তান দাবি করে, তারা প্রথম দফায় পাঁচটি এবং পরে আরও একটি—মোট ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে নামিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ফরাসি নির্মিত রাফায়েল জেটও। যদিও ভারত সরাসরি এই দাবি স্বীকার করেনি, তবে অস্বীকারও করেনি। ভারতীয় বিমানবাহিনীর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, ক্ষয়ক্ষতি যুদ্ধেরই অংশ।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার নিশ্চিত করেছেন, ওই রাতে ব্যবহৃত হয়েছিল চীনের তৈরি জে-১০সি ফাইটার জেট ও আধুনিক পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্র। এই পিএল-১৫ মিসাইল এবারই প্রথমবারের মতো বাস্তব যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার হলো। দার আরও জানান, হামলার দিন ভোর ৪টায় ইসলামাবাদে উপস্থিত ছিলেন চীনের রাষ্ট্রদূতসহ একটি প্রতিনিধি দল। তারা পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া শুনে সন্তোষ প্রকাশ করেন বলেও জানান তিনি।
এদিকে বেইজিং এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। কিন্তু ঘটনার ধরন ও সময় বিশ্লেষণ করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো—বিশেষ করে দ্য টেলিগ্রাফ, ব্লুমবার্গ, টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস—চীনের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করছে।তবে এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে গত ১০ মে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় উভয় দেশের মধ্যে ‘পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি’ কার্যকর হয়। তারপরও সীমান্তে চাপা উত্তেজনা বজায় রয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সংঘাত ভবিষ্যতে ভারত-চীন-পাকিস্তান ত্রিমুখী কৌশলগত সম্পর্কের দৃশ্যপটই বদলে দিতে পারে। বিশেষত, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা যদি চীনের প্রযুক্তিতে আরও আধুনিক হয়ে ওঠে—তবে দক্ষিণ এশিয়ার সামরিক ভারসাম্যে এক বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে।
উপমহাদেশ ডেস্ক
- উপমহাদেশ ডেস্ক#molongui-disabled-link
- উপমহাদেশ ডেস্ক#molongui-disabled-link
- উপমহাদেশ ডেস্ক#molongui-disabled-link
- উপমহাদেশ ডেস্ক#molongui-disabled-link