নিউজনেস্ট

উত্তরাখণ্ডের মাদ্রাসাগুলোর পাঠ্যক্রমে ঢুকানো হচ্ছে ‘অপারেশন সিন্দুর’!

ভারতের উত্তরাখণ্ডের মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষাব্যবস্থায় হঠাৎই ঢুকানো হচ্ছে ‘অপারেশন সিন্দুর’। দেশপ্রেমেলর অজুহাত দেখিয়ে মুসলিমদের ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিন্দুত্ববাদী সামরিক গল্প গুঁজে দিচ্ছে হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার।

উত্তরাখণ্ড মাদ্রাসা বোর্ডের প্রেসিডেন্ট মুফতি শামুন কাসেমি সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছেন, রাজ্যের ৪৫১টি মাদ্রাসার পাঠ্যক্রমে যোগ হবে ‘অপারেশন সিন্দুর’। তার ভাষায়, এতে ছাত্রদের মনে দেশপ্রেম তৈরি হবে। কিন্তু এটাই কি আসল কারণ?

বুঝতে হলে একটু গভীরে তাকাতে হবে। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ঠিক আগে কাসমি গিয়েছিলেন দিল্লি, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে দেখা করতে। সঙ্গে ছিলেন একদল তথাকথিত ‘বুদ্ধিজীবী’ আর সুফি নেতা। সেখানে বসেই স্থির হয়, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের শেখানো হবে—ভারতীয় সেনা কীভাবে পাকিস্তানে হামলা চালিয়ে তাদের ঘাঁটিগুলো ধ্বংস করেছে।

এই পুরো বিষয়টার ভেতর লুকিয়ে আছে একটা বড় রাজনীতি। হিন্দুত্ববাদী শক্তিগুলো বহুদিন ধরেই চায়—মাদ্রাসাকে তারা যেমন চায়, তেমন করে সাজাতে। মাদ্রাসাকে ’সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর’ বলার পর এবার তারা নিজেরাই মাদ্রাসার ভেতরে ঢুকে নিজেদের হিন্দুত্ববাদের গল্প ঢুকিয়ে দিচ্ছে। উদ্দেশ্য একটাই—মাদ্রাসার ছাত্রদের মধ্যে ‘হিন্দু রাষ্ট্রের প্রতি ভালোবাসা’ ঢুকিয়ে দেওয়া।

উত্তরাখণ্ড ওয়াকফ বোর্ডের প্রেসিডেন্ট শাদাব শামস তো সরাসরি বলেন, ‘এটা সৈন্যদের ভূমি। এখানকার মাদ্রাসার ছাত্ররাও যেন অপারেশন সিন্দুর পড়ে।’

কিন্তু যেই মাদ্রাসাগুলোকে এতদিন সন্ত্রাসীদের কারখানা বলা হত হঠাৎ করেই কীভাবে ও কেনই বা সেগুলোতে এমন সামরিক বিষয় ঢুকালো এই বিজেপি সরকার? এর পেছনে মূল লক্ষ্য হলো, যাতে হিন্দুত্ববাদী ভাবনা চুপিচুপি মাদ্রাসার ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়া যায়।

তারা বলছে, এনসিইআরটি পাঠ্যক্রম আনায় মাদ্রাসা নাকি ‘মূলধারায়’ এসেছে। কিন্তু সত্যটা হলো—এই মূলধারা আসলে বিজেপির ধারা। তারা চায় মাদ্রাসার ছাত্ররা কুরআন নয়, বরং তাদের নীতিনৈতিকতা শিখুক। তারা চায় ইসলামী মূল্যবোধ নয়, রাষ্ট্রীয় শক্তির গর্বে গর্বিত হোক তারা। আর সেটাই হচ্ছে এই ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর ভেতরের আসল রহস্য।

উপমহাদেশ ডেস্ক
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত