মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের মংডু শহরের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে জোরপূর্বক শ্রম দিতে বাধ্য করছে সন্ত্রাসী আরাকান আর্মি। স্থানীয় সূত্র জানায়, পিয়িন হপিউ গ্রামে এবং আশপাশের এলাকায় রোহিঙ্গাদের রাস্তা নির্মাণ ও পাথর বসানোর কাজে বাধ্য করা হচ্ছে। প্রায় ৯.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রাস্তা ‘কিয়াইকানপিয়িন’ ঘাঁটির দিকে যাচ্ছে।
আরাকান নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘হ্লা পাউ জার’, ‘পাউং জার’, ‘মিনগালা জি’ ও ‘কিয়াউক লাই খার’সহ বিভিন্ন গ্রামের প্রতিটি পরিবারকে বাধ্যতামূলকভাবে একজন করে সদস্য পাঠাতে বলা হচ্ছে এই কাজে। কেউ অস্বীকৃতি জানালে ২০,০০০ থেকে ৫০,০০০ কিয়াত (প্রায় ৪.৫৪–১১.৩৭ মার্কিন ডলার) জরিমানা ধার্য করা হচ্ছে।
রোহিঙ্গারা সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তীব্র রোদে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করছে, যেখানে তাদের জন্য কোনো খাবার বা পানির ব্যবস্থা নেই। পাথর ভাঙা, পাথর বহন করা এসব শ্রমসাধ্য কাজ করতে হচ্ছে কেবল নিজের রসদে।
একজন স্থানীয় রোহিঙ্গা বলেন, “কিছু মানুষকে রাতেও পাহারা দিতে বাধ্য করা হয়, ঘুমাতে পর্যন্ত দেওয়া হয় না। আমাদের আধুনিক যুগের দাসের মতো ব্যবহার করা হচ্ছে।”
সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো—যেসব পরিবারে প্রাপ্তবয়স্ক কেউ নেই, সেসব পরিবারের শিশুদের পর্যন্ত বাধ্য করা হচ্ছে শ্রমে। যা ইউনিসেফ ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার শিশুশ্রমবিরোধী আইন লঙ্ঘন করছে।
গত বছরের ৮ ডিসেম্বর থেকে মংডু শহরটি আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর থেকেই রোহিঙ্গাদের ওপর দমন-পীড়ন বাড়ছে। অভিযোগ রয়েছে, তারা রোহিঙ্গাদের বাড়ি দখল করে নিচ্ছে, তাদের মূল্যবান সম্পত্তি কেড়ে নিচ্ছে, মিথ্যা অভিযোগে বাড়ি তালাবদ্ধ করছে এবং বহু পরিবারকে গৃহহীন করে দিচ্ছে।
এছাড়া রোহিঙ্গাদের চলাচলের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। প্রতিটি রোহিঙ্গা গ্রামের প্রবেশ ও প্রস্থানে নিরাপত্তা চৌকি বসিয়ে তাদের চলাফেরা সীমিত করে ফেলা হয়েছে বলে জানা গেছে।
সূত্র: এএনএ
উপমহাদেশ ডেস্ক
- উপমহাদেশ ডেস্ক#molongui-disabled-link
- উপমহাদেশ ডেস্ক#molongui-disabled-link
- উপমহাদেশ ডেস্ক#molongui-disabled-link
- উপমহাদেশ ডেস্ক#molongui-disabled-link