তারিখ প্রদর্শন

উত্তরপ্রদেশে মুসলিম বসতি ও মসজিদ উচ্ছেদে বন বিভাগের নির্দেশ

উত্তরপ্রদেশে মুসলিম বসতি ও মসজিদ উচ্ছেদে বন বিভাগের নির্দেশ
উত্তরপ্রদেশে মুসলিম বসতি ও মসজিদ উচ্ছেদে বন বিভাগের নির্দেশ। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের উত্তরপ্রদেশের বাহরাইচ জেলার বিছিয়া অঞ্চলে ১৮০টিরও বেশি পরিবার এবং শতাব্দীপ্রাচীন নুরি মসজিদ এখন উচ্ছেদের মুখে। রাজ্যের বন বিভাগ সম্প্রতি এসব পরিবারকে উচ্ছেদের নোটিশ পাঠিয়েছে। বিভাগের দাবি এই বসতিগুলি বনভূমির আওতায় পড়েছে, তাই আইন অনুযায়ী তাদের সরিয়ে দেওয়া হবে।

তবে স্থানীয় বাসিন্দারা এই দাবিকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, এই এলাকায় তাদের বসবাস বহু প্রজন্ম ধরে। এমনকি ব্রিটিশ আমলে যখন রেললাইন বসানো হয়েছিল, তখনও তাদের পরিবার এই জায়গায় বসবাস করছিল।

বন বিভাগ নোটিশে তিন দিনের মধ্যে লিখিত প্রতিক্রিয়া জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। অন্যথায় তারা জোরপূর্বক উচ্ছেদ অভিযান চালাবে এমনকি বুল্ডোজার ব্যবহার করা হবে বলেও সতর্ক করে দিয়েছে।

এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শত শত গ্রামবাসী রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন। ‘ডিএফও কাতারনিয়াঘাট নিপাত যাক’ এই স্লোগানে মুখর হয়ে তাঁরা বাসে করে বাহরাইচে অবস্থিত বিভাগীয় বন কর্মকর্তার (DFO) কার্যালয়ে যান এবং সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, তারা ১৮৯১ সালেরও আগে থেকে বিছিয়ায় বসবাস করছেন এবং তাদের কাছে একশ বছরেরও পুরনো বসতির নথিপত্র রয়েছে। মতিপুর তহসিলের অন্তত ১১৪ জন বাসিন্দা ইতিমধ্যে নিজেদের মালিকানা দাবিতে সংশ্লিষ্ট ফর্ম জমা দিয়েছেন। তবে এসব দাবির যাচাইকরণ এখনও তহসিল স্তরে সম্পন্ন হয়নি।

প্রতিবাদকারীরা বাহরাইচের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) গৌরব রঞ্জন শ্রীবাস্তবের হাতে একটি লিখিত দাবিপত্রও জমা দেন, যাতে তাদের বসতিকে ‘বৈধ’ ঘোষণা করে উচ্ছেদের নোটিশ প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে।

এদিকে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বি. শিব শঙ্কর সাংবাদিকদের জানিয়েছেন যে উচ্ছেদের নোটিশগুলি বন আইন ৬১বি ধারার অধীনে জারি করা হয়েছে।

এই ঘটনায় এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে, আর অনেকেই মনে করছেন, প্রশাসনের এমন পদক্ষেপ শুধু বসতি নয়, একটি প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনাকেও বিপন্ন করে তুলেছে।

আমাদের ফলো করুন