নিউজনেস্ট

গাজার অটল শক্তি, ইসরায়েলের দুর্বল পরিণতি!

গাজার অটল শক্তি, ইসরায়েলের দুর্বল পরিণতি!
গাজার অটল শক্তি, ইসরায়েলের দুর্বল পরিণতি! ছবি : সংগৃহীত

গাজা। এক পবিত্র নাম, যে নামের সঙ্গে মিশে আছে সাহসিকতার অক্ষয় গাথা। যেখানে প্রতিটি ধূলিকণা, প্রতিটি ইট, প্রতিটি গাছপালা উচ্চারণ করে প্রতিরোধের মহাকাব্য। যুগে যুগে গাজার আকাশে যুদ্ধের কালো মেঘ ঘনিয়েছে, ভূমি থেকে উঠে এসেছে শত্রুদের নির্মম আগ্রাসনের কাহিনি। তবুও, এই ছোট্ট ভূখণ্ডটি বারবার প্রমাণ করেছে, একনিষ্ঠতা ও সংগ্রামের শক্তি যে কোনো পরাক্রমশালী শক্তিকেও পরাভূত করতে পারে।

‘গজওয়াতুল আহজাব’ বা খন্দকের যুদ্ধের কথা আমরা ইতিহাসের পাতা থেকে জানি। সেই যুদ্ধ ছিল সংঘবদ্ধ চক্রান্ত, দমন এবং নিপীড়নের বিরুদ্ধে অটল থাকার উদাহরণ। আজকের গাজার লড়াই যেন সেই যুদ্ধেরই প্রতিধ্বনি। গাজার প্রতিটি গলিতে, প্রতিটি ধ্বংসস্তূপে প্রতিধ্বনিত হয় সংগ্রামের এক অভূতপূর্ব সুর। এই লড়াই কোনো গল্প নয়; এটি বাস্তব, যা আমরা প্রত্যক্ষ করছি প্রতিদিন। প্রতিটি মায়ের কান্নায়, প্রতিটি যোদ্ধার দৃঢ়তায় আমরা দেখতে পাচ্ছি এক অনন্য ইতিহাসের রচনা।

গাজাকে নিঃশেষ করতে শত্রুরা একজোট হয়েছিল। তাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল আন্তর্জাতিক শক্তি এবং বিশ্বাসঘাতক মিত্ররা। চারদিকে অবরোধ, শত্রুর ষড়যন্ত্র আর দমননীতির বেড়াজালে আবদ্ধ থেকেও গাজা তার বিশ্বাস থেকে সরে আসেনি। এই মাটি যেন সাহসিকতার এক অবিনাশী স্তম্ভ।

প্রতিটি মানুষ এখানে একেকজন সৈনিক। তাদের হাতে অস্ত্র নেই, কিন্তু তাদের হৃদয়ে আছে অপরিসীম সাহস। এই সাহস ম্লান করে দেয় শত্রুর শক্তি, গুড়িয়ে দেয় মিথ্যার প্রাচীর। গাজার লড়াই কেবল অস্ত্রের নয়; এটি এক বিশ্বাসের লড়াই, ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানোর সংগ্রাম।

অপর দিকে ইসরায়েলের আধুনিক অস্ত্র, সামরিক প্রযুক্তি এবং আন্তর্জাতিক সমর্থন থাকা সত্ত্বেও তারা গাজার প্রতিরোধ ভাঙতে ব্যর্থ হয়েছে। তাদের পরাজয় শুধু যুদ্ধক্ষেত্রে নয়; এটি তাদের নৈতিক ভঙ্গুরতারও প্রতীক। শত্রুরা ভেবেছিল, সামরিক শক্তি দিয়ে তারা গাজার স্বপ্ন চিরতরে মুছে ফেলবে। কিন্তু গাজার মাটি প্রমাণ করেছে, ন্যায় এবং সত্যের বিরুদ্ধে কোনো মিথ্যার রাজত্ব দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না।

গাজার প্রতিটি শহীদ, প্রতিটি মা, প্রতিটি শিশু-কিশোর এক নতুন ইতিহাস লিখেছে। তারা শিখিয়েছে, কীভাবে প্রতিকূলতার মাঝেও দাঁড়াতে হয় অটল। শত্রুরা যেখানে ধ্বংস চেয়েছিল, সেখানে গাজার মানুষ সৃষ্টি করেছে এক নতুন অধ্যায়। এই বিজয় শুধু সামরিক নয়; এটি এক নৈতিক বিজয়, যা প্রমাণ করে, ন্যায় সর্বদা অন্যায়কে পরাভূত করে।

গাজার লড়াই শুধু আজকের নয়; এটি ভবিষ্যতের জন্য এক শক্তি, এক অনুপ্রেরণা। এটি দেখিয়েছে, শত্রু যতই শক্তিশালী হোক, ধৈর্য, বিশ্বাস এবং ন্যায়ের ওপর অটল থাকলে বিজয় সুনিশ্চিত।

গাজার এই বিজয় শুধু ফিলিস্তিনিদের নয়; এটি সমগ্র মুসলিম বিশ্বের এবং সব মুক্তিকামী মানুষের। এটি আমাদের শিখিয়েছে, কীভাবে লড়াই করতে হয়, কীভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হয়। গাজার এই সংগ্রাম প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে পড়বে। এটি সাহসের মশাল হয়ে প্রজ্জ্বলিত থাকবে, স্মরণ করিয়ে দেবে—ন্যায়ের লড়াই কখনো থামে না। আর সত্যের পথেই প্রকৃত বিজয় নিশ্চিত হয়।

গাজার ভূমি আজ, কাল এবং অনন্তকাল ধরে সংগ্রামের প্রতীক হয়ে থাকবে। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেবে, যেকোনো অন্ধকারকে পেছনে ফেলে আলোর পথে এগিয়ে যাওয়াই মানুষের প্রকৃত পরিচয়।

নিউজনেস্ট ডেস্ক
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত