চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম ধাপেই নাটকীয়তার চূড়ান্ত প্রমাণ রাখল বার্সেলোনা। বেনফিকার বিপক্ষে লিসবনে অনুষ্ঠিত নয় গোলের থ্রিলারে ৫-৪ ব্যবধানে জয় তুলে নিয়ে শেষ ষোলোতে জায়গা নিশ্চিত করল বার্সেলোনা।
ম্যাচের নায়ক রাফিনহা। তার জীবনের সেরা ফর্মে থাকার প্রমাণ দিলেন এই ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার। ৯৬তম মিনিটে করা দুর্দান্ত এক গোলের মাধ্যমে দলকে এনে দেন অবিস্মরণীয় জয়। ম্যাচ শেষে রাফিনহা বলেন, “আমার ক্যারিয়ারের সেরা সময় চলছে। আমরা জানতাম এটি কঠিন ম্যাচ হবে। প্রথমার্ধে ৩-১ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েও আমরা লড়াই চালিয়ে গেছি। এটা সত্যিই এক অসাধারণ ম্যাচ।”
ম্যাচে বার্সেলোনা ৩-১ এবং ৪-২ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়লেও দ্বিতীয়ার্ধে অসাধারণ পারফরম্যান্সে ম্যাচ নিজেদের করে নেয়। রাফিনহার জোড়া গোলের পাশাপাশি দলের জন্য অবদান রাখেন ফ্রেনকি ডি ইয়ং এবং জোয়াও ফেলিক্স। বেনফিকার বিপক্ষে জয় নিশ্চিত করা গোলটি আসে ৯৫ মিনিট ৮ সেকেন্ডে, যা চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে বার্সেলোনার সবচেয়ে দেরিতে করা জয়সূচক গোল।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে এই প্রথম ৫-৪ গোলের স্কোরলাইনে কোনো ম্যাচ শেষ হলো। পাশাপাশি, ইউরোপিয়ান কাপে প্রথমবারের মতো দুই গোল পিছিয়ে থেকেও জয় তুলে নিল বার্সেলোনা। এর আগে মাত্র একবার চ্যাম্পিয়নস লিগে বেনফিকা দুই গোলের লিড হারিয়ে পরাজিত হয়েছিল, ১৯৮৪ সালে রেড স্টার বেলগ্রেডের বিপক্ষে।
ম্যাচ শেষে বার্সেলোনার কোচ হানসি ফ্লিক বলেন, “ম্যাচের সবচেয়ে ইতিবাচক দিক ছিল আমাদের মানসিকতা। আমরা দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছি। এমন প্রত্যাবর্তন আমি আগে কখনো দেখিনি। এটি ফুটবলের সৌন্দর্য। বেনফিকা খুব ভালো খেলেছে, কিন্তু আমরা শেষ পর্যন্ত নিজেদের মেলে ধরতে পেরেছি।”
ম্যাচ শেষে দু’দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। রাফিনহা জানান, বেনফিকার কিছু খেলোয়াড় তাকে অপমান করেছিল। তিনি বলেন, “আমি সবাইকে সম্মান করি। কিন্তু ম্যাচ শেষে কিছু খেলোয়াড় আমাকে অপমান করেছে। আমি তখন পাল্টা জবাব দিয়েছি। এটা ঠিক হয়নি, কিন্তু এমন উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্তে এগুলো ঘটেই।”
এই জয়ের মাধ্যমে বার্সেলোনা শুধু শেষ ষোলো নিশ্চিত করেই থেমে থাকেনি, বরং চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজেদের মানসিক দৃঢ়তা এবং ঐতিহ্যের আরও একটি উদাহরণ রেখে গেল।







