সংবিধান সংস্কার কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করল বিসিবি

সংবিধান সংস্কার কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করল বিসিবি
বিসিবি পরিচালনা পর্ষদের ১৭তম সভা শেষে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। ছবি: বিসিবি

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) তাদের বিতর্কিত সংবিধান সংস্কার কমিটির সমস্ত কার্যক্রম স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শনিবার শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের ১৭তম সভা শেষে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদীনের নেতৃত্বে গঠিত এই কমিটি সম্প্রতি বিসিবির সংবিধানে ব্যাপক পরিবর্তনের প্রস্তাব দিলে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে। ঢাকা ক্লাব সংগঠকরা ১৪ জানুয়ারি প্রস্তাবিত সংবিধান সংস্কারের বিরুদ্ধে বয়কটের হুমকি দেয় এবং চার দিন পর ক্লাবগুলো প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ বর্জন করে। এতে প্রায় ১,৬০০ থেকে ২,০০০ ক্রিকেটারের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।

কমিটি প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল সিসিডিএম (ক্লাব কমিটি) বিলুপ্ত করা, বিসিবি জেনারেল কাউন্সিলে ক্যাটাগরি-২ কাউন্সিলরের সংখ্যা কমানো, এবং ঢাকা-ভিত্তিক ক্লাবগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী পরিচালকের সংখ্যা ১২ থেকে ৪-এ নামিয়ে আনা। পাশাপাশি, বিসিবি পরিচালকের মোট সংখ্যা ২৫ থেকে ২১-এ কমানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।

বিসিবি পরিচালক মাহবুব আনাম বলেন, ‘তারা (সংস্কার কমিটি) এখনও কোনো কিছু পরিচালনা পর্ষদ বা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে উপস্থাপন করেনি। আমরা মনে করছি সংবিধান নিয়ে যে কোনো কার্যক্রম স্বচ্ছ হতে হবে। এটি একটি পাবলিক ডকুমেন্ট এবং এর ওপর কোনো গোপনীয়তা থাকা উচিত নয়। তাই এই কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।’

তিনি আরও যোগ করেন, “স্টেকহোল্ডারদের সম্পৃক্ত করাই মূল লক্ষ্য। তবে কমিটির কাজের ক্ষেত্র এবং সম্প্রসারণ বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এটি সবার সামনে উপস্থাপন করা হবে। আপাতত আমরা কমিটির কার্যক্রম স্থগিত রাখছি।”

এদিকে, চলমান বিপিএল ঘিরে বিতর্কের বিষয়টিও বিসিবি সমাধানের চেষ্টা করছে। খেলোয়াড়দের পাওনা পরিশোধের দাবি এবং ম্যাচ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে বিসিবি বিব্রতকর অবস্থায় রয়েছে।

বিসিবি সূত্রে জানা যায়, ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের চুক্তি মেনে চলার ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করা হবে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

অন্যদিকে, বিসিবির স্থায়ী কমিটি গঠন করা হলেও ফারুক আহমেদের নেতৃত্বাধীন বোর্ডে বেশ কয়েকটি পদ শূন্য রয়েছে। সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলনের সময় দেশত্যাগ করার পর এই বোর্ড দায়িত্ব নেয়।

মাহবুব আনাম জানান, “শূন্য পদ পূরণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে আমাদের আইনি টিমকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

বিসিবির এই সিদ্ধান্ত দেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন দিকনির্দেশনা প্রদান করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আমাদের ফলো করুন