ফিলিস্তিনের পতাকা সংবলিত পোশাক পরায় আরাকানে তিন রোহিঙ্গা গ্রেপ্তার

ফিলিস্তিনের পতাকা সংবলিত পোশাক পরায় আরাকানে তিন রোহিঙ্গা গ্রেপ্তার
ফিলিস্তিনের পতাকা সংবলিত পোশাক পরায় আরাকানে তিন রোহিঙ্গা গ্রেপ্তার। ছবি : আরাকান নিউজ এজেন্সি

আরাকানে ফিলিস্তিনের পতাকা সংবলিত পোশাক পরা এবং বিক্রির অভিযোগে তিন রোহিঙ্গা মুসলিমকে গ্রেপ্তার করেছে সন্ত্রাসী আরাকান আর্মি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার মংডু শহরের শিডা ফারা গ্রামে টহলের সময় আরাকান আর্মি এক যুবককে আটক করে। যুবকটি ফিলিস্তিনের নাম লেখা একটি টি-শার্ট পরেছিলেন। তাকে গ্রেপ্তারের সময় সেনারা শারীরিকভাবে নির্যাতন করে এবং চিৎকার করে বলে, ‘আমরা রাখাইনরা ইহুদিদের মতো,’ যা তাদের জাতিগত পরিচয়ের দিকে ইঙ্গিত করে।

পরে ওই যুবককে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পুরনো একটি ঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হয়, যা বর্তমানে আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেখানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা হয়, তিনি টি-শার্টটি কোথা থেকে পেয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় সেনারা ওই টি-শার্ট বিক্রেতার দোকান ও বাজারে অভিযান চালায়। অভিযানে বিক্রেতাসহ আরও এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।

আরাকান নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রেপ্তারকৃত তিনজনকে বর্তমানে ওই সামরিক ঘাঁটিতে আটক রাখা হয়েছে এবং তারা সেনাদের নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।

রোহিঙ্গাদের ওপর এমন নিপীড়নকে জাতিগত বিদ্বেষের অংশ হিসেবে দেখছেন আরাকান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষকরা। এক পর্যবেক্ষক বলেন, এই ঘটনাগুলো ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের নিপীড়নের সঙ্গে মিল রয়েছে। আরাকানের বাইরে থাকা এক রোহিঙ্গা যুবক জানান, রোহিঙ্গাদের নিপীড়নের ধরন ফিলিস্তিনিদের মতো হলেও এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজরে আসছে না।

বর্তমানে আরাকান আর্মি আরাকান রাজ্যের বেশিরভাগ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা মংডু, বুথিদং এবং রাথিদংসহ রোহিঙ্গাদের তিনটি প্রধান শহরের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এসব এলাকায় রোহিঙ্গারা দীর্ঘদিন ধরে নিপীড়নের শিকার। হাজারো মানুষকে ঘরছাড়া করা হয়েছে, বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং সম্প্রতি মংডু শহরে বাস্তুচ্যুতদের ঘরে ফেরানোর প্রক্রিয়া থেকেও তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের নভেম্বর মাসে আরাকান আর্মি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে এবং রাজ্যের বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। তবে এই সংঘাতে রোহিঙ্গারা উভয় পক্ষের সহিংসতা, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি এবং বাধ্যতামূলক সেনা নিয়োগের শিকার হয়েছেন।

আমাদের ফলো করুন