জাতীয় সংসদসহ সব নির্বাচনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচনব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট। সংগঠনটি জানিয়েছে, এ দাবি না মানা হলে তারা কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না এবং ভোটকেন্দ্রেও যাবে না।
আজ শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি তুলে ধরেন সংগঠনটির নেতারা। লিখিত বক্তব্যে নির্বাহী সভাপতি প্রদীপ কুমার পাল বলেন, দেশের ১২ শতাংশ সংখ্যালঘু জনসংখ্যার অনুপাতে ৩৫০ আসনের মধ্যে অন্তত ৪২টি আসন সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত রাখা উচিত। এর মধ্যে ৩৮টি হিন্দু, ৩টি বৌদ্ধ, ১টি খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের জন্য এবং ৬টি সংরক্ষিত নারী আসনের মধ্যে ৪টি হিন্দু ও ২টি বৌদ্ধদের জন্য দাবি করা হয়।
তিনি আরও বলেন, সংরক্ষিত আসনের প্রার্থীদের নির্বাচিত করতে সংশ্লিষ্ট সম্প্রদায়ের ভোটাররা সরাসরি ভোট দেবেন। এ ব্যবস্থায় হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, আদিবাসী ও খ্রিষ্টান সংসদ সদস্যরা সমান মর্যাদা পাবে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রদীপ কুমার পাল অভিযোগ করেন, ‘অতীতের কোনো সরকারই হিন্দু সম্প্রদায়ের সমস্যার স্থায়ী সমাধানে আন্তরিক ছিল না। ১৯৫৪ সাল থেকে আওয়ামী লীগ হিন্দুদের রাজনৈতিক পুঁজি হিসেবে ব্যবহার করেছে, অথচ তাদের উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা নেয়নি।’
তিনি দাবি করেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা অনুপাতে ৪২টি আসন পাওয়া উচিত হলেও যুগ যুগ ধরে যৌথ নির্বাচনের কারণে তা সম্ভব হয়নি। বিএনপি থেকে মাত্র একজন, জাতীয় পার্টি থেকে ২-৩ জন এবং আওয়ামী লীগ থেকে প্রায় ১৫ জন হিন্দু সম্প্রদায়ের সংসদ সদস্য হয়েছেন। ভবিষ্যতে পার্লামেন্ট হিন্দু শূন্য হওয়ার শঙ্কাও প্রকাশ করেন তিনি।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে পৃথক নির্বাচনব্যবস্থা চালুর যৌক্তিকতা উল্লেখ করে সংবিধান সংস্কার কমিশন ও নির্বাচন সংস্কার কমিশনের কাছে প্রস্তাবও দিয়েছে সংগঠনটি। তবে সংগঠনের দাবি, কমিশন তাদের এই প্রস্তাব অগ্রাহ্য করেছে। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠনের প্রস্তাবেও সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্বের নিশ্চয়তা রাখা হয়নি, যা হিন্দু মহাজোট প্রত্যাখ্যান করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি দীনবন্ধু রায় বলেন, ‘সংখ্যালঘুদের জন্য পৃথক নির্বাচনব্যবস্থা চালু হলে, যেসব হিন্দু প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেবেন, তাদের অন্য আসনের হিন্দু ভোটাররাও ভোট দিতে পারবেন। এতে নিজেদের জন্য সংরক্ষিত প্রার্থীকে ভোট দিয়ে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার সুযোগ পাবে সংখ্যালঘুরা।’