পরিত্যক্ত সামরিক সরঞ্জাম পুনরুদ্ধারে আফগান প্রতিরক্ষা বাহিনীর নজিরবিহীন সাফল্য

পরিত্যক্ত সামরিক সরঞ্জাম পুনরুদ্ধারে আফগান প্রতিরক্ষা বাহিনীর নজিরবিহীন সাফল্য
পরিত্যক্ত সামরিক সরঞ্জাম পুনরুদ্ধারে আফগান প্রতিরক্ষা বাহিনীর নজিরবিহীন সাফল্য। ছবি: এইচআর

যুদ্ধের বিভীষিকাময় অবস্থা পেরিয়ে নিজেদের শক্তিশালী করে তুলছে আফগান প্রতিরক্ষা বাহিনী। পশ্চিমা সেনারা যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার সময় বিপুল পরিমাণ সামরিক যান ও অস্ত্র অকেজো করে ফেলে রেখে যায়। কিন্তু আফগান বাহিনীর অক্লান্ত পরিশ্রম ও দক্ষতায় সেই সরঞ্জামগুলো আবার কার্যকর হয়ে উঠছে।

আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘২০১ খালিদ বিন ওয়ালিদ কোর’ এর লজিস্টিক সহায়ক ব্যাটালিয়ন গত এক বছরে ২ হাজার ১০টি সামরিক যান ও ২২৭টি হালকা ও ভারী অস্ত্র মেরামত ও পুনরুদ্ধার করেছে। এই সাফল্য শুধু সামরিক সক্ষমতা বাড়ায়নি, বরং আত্মনির্ভরশীলতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, এই উদ্যোগ দেশের সামরিক সক্ষমতা আরও শক্তিশালী করতে নেওয়া একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ। আফগান বিশেষজ্ঞ ও প্রযুক্তিবিদগণ দিনরাত পরিশ্রম করে সরকারি সম্পদের এই সামরিক সরঞ্জাম রক্ষণাবেক্ষণ ও পুনরুদ্ধারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

‘২০১ খালিদ বিন ওয়ালিদ কোর’ এর এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের কৌশল পরিষ্কার—আমরা কারও ওপর নির্ভরশীল থাকব না। আমাদের দেশকে রক্ষা করতে আমাদের স্বনির্ভর হতে হবে।’

মেরামতের এই বিশাল কর্মযজ্ঞ শুধু সামরিক বাহিনীর সরঞ্জাম পুনরুদ্ধারেই নয়, বরং যুদ্ধক্ষেত্রে দ্রুত সাড়া দেওয়ার ক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যেও করা হচ্ছে। কোরের এক কমান্ডার জানান, ‘আমরা যেকোন পরিস্থিতিতে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে চাই। আমাদের যোদ্ধারা যেমন প্রস্তুত, তেমনই প্রস্তুত থাকবে আমাদের অস্ত্র ও যানবাহন।’

উল্লেখ্য, মার্কিন বাহিনী ও ন্যাটো সৈন্যরা আফগানিস্তান থেকে চলে যাওয়ার সময় বিপুল সামরিক সরঞ্জাম অকেজো অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। অনেকেই ভেবেছিল, এই অস্ত্র ও যানবাহন হয়তো আর কখনো ব্যবহারের উপযোগী হবে না। কিন্তু আফগান প্রযুক্তিবিদ ও প্রকৌশলীদের অভূতপূর্ব দক্ষতায় সেই সরঞ্জামগুলো পুনরায় সচল হয়েছে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘এটি আমাদের আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। বিশ্বকে আমরা জানিয়ে দিতে চাই, আফগানিস্তান দুর্বল নয়। আমরা আমাদের দেশকে রক্ষা করতে সক্ষম।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি আফগান বাহিনীর জন্য শুধু সামরিক অর্জন নয়, বরং এটি এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা। যেখানে দেশটি ধীরে ধীরে আরও আত্মনির্ভর হয়ে উঠছে এবং প্রতিরক্ষা শক্তি বাড়িয়ে তুলছে।

আমাদের ফলো করুন