সিরিয়ায় অবস্থানরত সেনাদের সংখ্যা কমাতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাতে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, সিরিয়ায় অবস্থানরত সেনাদের একত্রিত করার পরিকল্পনা করছে মার্কিন সেনাবাহিনী। এই পদক্ষেপের ফলে দেশটিতে মোতায়েন মার্কিন সেনার সংখ্যা অর্ধেকে নেমে আসতে পারে।
বর্তমানে সিরিয়ায় প্রায় দুই হাজার মার্কিন সেনা রয়েছে। যাদের অধিকাংশই উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন ঘাঁটিতে অবস্থান করছে। তারা স্থানীয় কুর্দি বাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে। যাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর পুনরুত্থান ঠেকানো। ২০১৪ সালে আইএস ইরাক ও সিরিয়ার একটি বিশাল এলাকা দখল করেছিল। যা পরে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে দমন করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা জানান, এই পুনর্বিন্যাসের ফলে সিরিয়ায় মার্কিন সেনাসংখ্যা কমে প্রায় এক হাজারে দাঁড়াতে পারে। আরেক কর্মকর্তা এ পরিকল্পনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সেনা প্রত্যাহার করা হবে ঠিকই, তবে ঠিক কতজন সেনা প্রত্যাহার করা হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তিনি এত বড় পরিসরের সেনা হ্রাস নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন, বিশেষ করে যখন ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের সঙ্গে আলোচনায় আছে এবং মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে।
ইসরায়েলের উদ্বেগ প্রকাশ
চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইসরায়েলি একটি সম্প্রচারমাধ্যম জানায়, হোয়াইট হাউজের শীর্ষ কর্মকর্তারা ইসরায়েলি সমকক্ষদের জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সিরিয়া থেকে আংশিক সেনা প্রত্যাহার করতে চান।
মাধ্যমটি আরও জানায়, এই সেনা প্রত্যাহার ইসরায়েলের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হতে পারে এবং সিরিয়ার কুর্দি বাহিনীগুলোর উপরও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র বহুদিন ধরে বলে আসছিল যে, সিরিয়ায় প্রায় ৯০০ সেনা মোতায়েন রয়েছে। তবে গত ডিসেম্বর মাসে পেন্টাগন স্বীকার করে যে, এই সংখ্যা বেড়ে প্রায় দুই হাজারে পৌঁছেছে, যাদের অধিকাংশই পূর্ব সিরিয়ায় অবস্থান করছে।
ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, এসব সেনা কুর্দি বাহিনীর সাথে যৌথভাবে কাজ করছে আইএসের পুনরুত্থান রোধ এবং সিরিয়ায় ইরানি প্রভাব হ্রাস করার লক্ষ্যে। তবে সিরিয়ার নতুন সরকার স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, তারা চায় সব বিদেশি সেনা দেশ ছেড়ে যাক। ফলে মার্কিন সেনা উপস্থিতির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে সিরিয়া থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের চেষ্টা করেছিলেন। ফলে তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস পদত্যাগ করেন।
সূত্র: এজে







