কলকাতার এক সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এক গর্ভবতী মুসলিম নারীকে চিকিৎসা না দিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছেন উগ্র হিন্দুত্ববাদী এক চিকিৎসক। কারণ হিসেবে বলেছেন, ’কাশ্মীরের পেহেলগামে যা হয়েছে, তার পর মুসলমানদের আমি দেখবো না।’ এই মন্তব্য ঘিরে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে সামাজিক মাধ্যম ও অধিকারকর্মীদের মধ্যে।
ভুক্তভোগী ওই নারী গত সাত মাস ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন গাইনি ও অবস চিকিৎসক ডা. সি. কে. সরকার-এর অধীনে। তিনি কলকাতার কাস্টুরি দাস মেমোরিয়াল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল-এর চিকিৎসক।
ভুক্তভোগীর আত্মীয় ও আইনজীবী মেহফুজা খাতুন জানান, ডা. সরকার স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ‘কাশ্মীরের ঘটনার পর আমি কোনো মুসলমান রোগী দেখবো না। হিন্দুরা যদি তোমার স্বামীকে মেরে ফেলে, তখন বুঝবে কেমন লাগে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতে মুসলমানদের নিষিদ্ধ করা উচিত!’
মেহফুজা খাতুন এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। তিনি লিখেছেন, এটি শুধু বৈষম্য নয়, এটি মানুষের প্রাণ নিয়ে ছিনিমিনি খেলার মত একটি ঘৃণাজনিত অপরাধ। তার ভাষ্যমতে, ওই গর্ভবতী নারী শারীরিকভাবে বিপদে না পড়লেও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। সে এখনো কাঁদছে—নিজের জন্য না, পেটে থাকা শিশুটির জন্য।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কাশ্মীরের পহেলগামে এক হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। যাদের মধ্যে বেশিরভাগ ছিলেন হিন্দু। হামলাকারীরা ধর্ম যাচাই করে মুসলমানদের ছেড়ে দেয় বলে বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এই ঘটনার পর থেকেই ভারতে বিভিন্ন জায়গায় মুসলিমবিরোধী বক্তব্য, হুমকি ও সহিংসতা বেড়েছে।
চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হওয়ার এই ঘটনা সেই সাম্প্রদায়িক উত্তেজনারই এক করুণ প্রতিফলন।
আইনজীবী খাতুন প্রশ্ন তোলেন, একজন গর্ভবতী নারীর কাছে চিকিৎসা জীবন-মৃত্যুর বিষয়। একজন চিকিৎসক কীভাবে ধর্ম দেখে চিকিৎসা দিতে অস্বীকার করতে পারেন?
তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ও মানবাধিকার সংগঠনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হবে।
এদিকে সমাজকর্মী মোনা আম্বেগাঁওকর চিকিৎসক ডা. সি. কে. সরকারকে মহা হুমকি বলে আখ্যা দিয়ে তাকে বয়কটের আহ্বান জানিয়েছেন।
সূত্র: এমএম
উপমহাদেশ ডেস্ক
- উপমহাদেশ ডেস্ক#molongui-disabled-link
- উপমহাদেশ ডেস্ক#molongui-disabled-link
- উপমহাদেশ ডেস্ক#molongui-disabled-link
- উপমহাদেশ ডেস্ক#molongui-disabled-link