গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে কাজ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। তবে এ প্রক্রিয়া জটিল ও কঠিন আলোচনার মধ্য দিয়ে এগোচ্ছে।
মার্কিন পত্রিকা পলিটিকো জানিয়েছে, ট্রাম্পের রিপাবলিকান দলের কর্মকর্তারা প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের সাথে কাজ করেছেন। তবে তারা স্বীকার করেছেন, এই চুক্তি এগিয়ে নেওয়া সহজ হবে না।
একজন রিপাবলিকান কর্মকর্তা বলেন, বাইডেন আমাদের জন্য যা রেখে গেছেন তা কেবল শুরু। এটি চুক্তির শেষ ধাপ নয়।
ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেও পরিস্থিতি সহজ নয় বলে উল্লেখ করেছেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি বলেছিলেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তি টিকবে কি না, সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই।
গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প আবারও বাইডেনের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় কথা বলেন। তিনি দাবি করেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলার জন্য বাইডেন দায়ী এবং তিনিই গাজায় যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। ট্রাম্প আরও জানান, তিনি মধ্যপ্রাচ্যে সফরের কথা ভাবছেন, তবে এখনই নয়।
হামাসকে নিষিদ্ধ করার দাবি
ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম ওয়ালা জানিয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প শিগগিরই অঞ্চলটির বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা শুরু করবেন।
ইসরায়েলি সূত্রে জানা গেছে, ইসরায়েল এই আলোচনায় দাবি জানাবে, গাজা শাসনে যেন আর হামাসের কোন ভূমিকা না থাকে। তারা চায় হামাসের পরিবর্তে অন্য কোনো সংগঠন গাজা শাসন করুক।
রাফাহ সীমান্তে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েলের
ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকের আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় একটি বিবৃতি দিয়েছে। এতে জানানো হয়, রাফাহ সীমান্তে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাজ সীমাবদ্ধ থাকবে কেবল পাসপোর্টে সিল মারা পর্যন্ত।
বিবৃতিতে বলা হয়, চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েলের সেনারা সীমান্ত ঘিরে রাখবে এবং সেখানে যাতায়াত ইসরায়েলের অনুমোদন ও নিয়ন্ত্রণের অধীনে হবে।
রাফাহ সীমান্তের পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হবে এমন গাজাবাসীদের, যারা হামাসের সাথে কোনভাবে যুক্ত নন। ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেত (শাবাক) ঐ সমস্ত ব্যক্তিদের পরীক্ষা ও অনুমোদন দিয়েছে, যারা আগে থেকেই গাজার পানি, বিদ্যুৎ এবং পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থার দায়িত্বে ছিলেন।
এই কার্যক্রম আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে। চুক্তির প্রথম ধাপে এই ব্যবস্থা কার্যকর থাকবে এবং ভবিষ্যতে এটি নিয়ে পুনর্বিবেচনা করা হবে।
কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতা
গাজা চুক্তি বাস্তবায়নে কাতার ও মিসর যৌথভাবে কাজ করছে। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কাতারের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুর রহমান আলে সানি মিসরের প্রধানমন্ত্রী মুস্তফা মাদবুলির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তারা গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই দেশ চুক্তি বাস্তবায়নে সমন্বয় অব্যাহত রাখার ওপর জোর দিয়েছে। গত ১৯ জানুয়ারি থেকে এই চুক্তির প্রথম ধাপ কার্যকর হয়েছে এবং এটি ৪২ দিন পর্যন্ত চলবে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজিদ আনসারি এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা করতে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো চুক্তি কার্যকর হওয়ার ১৬তম দিনে বৈঠক করবে। তিনি বলেন, আমরা দ্বিতীয় ধাপের চুক্তির খসড়া তৈরি করছি।
বর্তমান পরিস্থিতি ইঙ্গিত দেয়, বর্তমান চুক্তিটি দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশ করলেও তা বাস্তবায়ন সহজ হবে না। ইসরায়েলের কৌশল এবং হামাসকে নিষিদ্ধ করার দাবির কারণে আলোচনা দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে কাতার ও মিসরের মতো পক্ষগুলো বিষয়টি সমাধানে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করছে।
সূত্র: আল জাজিরা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link