চট্টগ্রামের বিখ্যাত মাদরাসা জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়া ও সর্বস্তরের ছাত্রজনতার উদ্যোগে আজ রবিবার বিকাল তিনটায় পটিয়ার ডাক বাংলায় বিশ্বনবি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভারতীয় পুরোহিত রামগিরি মহারাজ কর্তৃক কটূক্তি ও ধর্ম অবমাননার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে জামিয়া পটিয়ার সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা কাজি আখতার হুসাইন আনোয়ারীসহ ছাত্র প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। এবং মাওলানা কাজি আখতার হুসাইন আনোয়ারীর দুআ ও মোনাজাতের মাধ্যমে সমাবেশ সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
সমাবেশে বক্তারা রামগিরি মহারাজের কটূক্তিকে তীব্র নিন্দা জানান এবং বিজেপি নেতার সমর্থনকে ইসলাম এবং মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষের বহিঃপ্রকাশ বলে অভিহিত করেন।

মাওলানা কাজি আখতার হুসাইন আনোয়ারী বলেন, ‘ইসলামে ধর্ম ও নবি অবমাননার একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। ভারতে আগেও অনেকে আমাদের প্রাণের নবিকে নিয়ে কটূক্তি ও অবমাননা করা হয়েছে এবং গত কয়েকদিন আগে ভারতীয় পুরোহিত কর্তৃক আমাদের নবিকে ফের অবমাননা করা হয়েছে। আমরা এর সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি। পাশাপাশি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট আহবান করব, কুখ্যাত আসাদ নূরসহ বাংলাদেশে যারা নিয়মিত নবি অবমাননা করে যাচ্ছে তাদেরকে খুঁজে বের করে দ্রুত সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনুন। অন্যথায় তাওহিদবাদী জনতা তপ্ত লাভার মতো ফুঁসে উঠবে। নবি অবমাননার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের আইন পাশ করে এদেশের কোটি-কোটি তাওহিদি জনতার আবেদনকে সম্মান করুন।’
এছাড়াও ভারতীয় আগ্রাসন, সীমান্তহত্যা, পানি আগ্রাসনসহ ভারতের আগ্রাসী অপতৎপরতার বিরুদ্ধে বক্তারা জোরালো বক্তব্য প্রদান করেন এবং ভারতের সাথে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি ভেঙে দিয়ে চোখে চোখ রেখে ডিল করার আহ্বান করেন।
বক্তারা আরও বলেন ২৪ এর স্বাধীনতার পর মুসলমানরা সর্বাত্মকভাবে মন্দির পাহারা দিয়েছে, থানা পাহারা দিয়েছে, বন্যায় হিন্দু সম্প্রদায়সহ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সহায়তা করেছে। কিন্তু ভারত নিজেদের একটা গণতান্ত্রিক দেশ দাবি করা সত্ত্বেও সেখানে মুসলমানদের উপর অত্যাচার এবং হত্যাযজ্ঞ চালায়। মুসলমানদের ভালো আচরণের বিপরীতে তারা উপহার দেয় মুসলিমনিধন, নবি অবমাননা, পানি আগ্রাসন এবং সীমান্ত হত্যা।
ভারতের সাথে যে সমস্ত নতজানুমূলক চুক্তি আছে তা ভঙ্গ করে একটি ভারসাম্যপূর্ণ নতুন চুক্তির দাবি জানান বক্তারা। ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন বলেও জানান এবং বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা উলামায়ে কেরাম এবং বিপ্লবী ছাত্রজনতার অধীনে দেশের উলামায়ে কেরাম, সাধারণ জনতা এবং শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং নবি অবমাননার শাস্তি বাস্তবায়ন করার দাবিতে জোরালো আওয়াজ তোলেন।

বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলটি জামিয়া পটিয়ার ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে থানার মোড়ের দিকে অগ্রসর হয়ে দীর্ঘ মিছিল নিয়ে পোস্ট অফিস পর্যন্ত গিয়ে আবার ডাক বাংলা মোড়ে সমাবেশস্থলে ফিরে আসে। এতে জামিয়া পটিয়ার শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও এলাকার তাওহিদি জনতা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও এই সমাবেশে যোগ দেন। সমাবেশে জামিয়া পটিয়ার ছাত্র প্রতিনিধি কাসেম আল নাহিয়ান, ইসামুদ্দিন মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম, মাহফুজুর রহমান, নাহিন শিকদার, আব্দুল্লাহ নোমানি, রিয়াদ হুসাইন, মুহাম্মাদ বিন নূর, আম্মার বক্তব্য রাখেন।