সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজ মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে বলেছে, লেবাননের হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে ইসরায়েল কর্তৃক হত্যার পর যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে তার সেনাবাহিনীর সংখ্যা বাড়ানোর কথা বিবেচনা করছে।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, মার্কিন সেনাবাহিনী মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনকে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন বাহিনীর অবস্থানকে শক্তিশালী করে এমন কিছু প্রস্তাবনা পেশ করেছে।
তবে বার্তা সংস্থা এনবিসির বিশ্লেষণ মতে, প্রস্তাবিত বিষয়গুলো নিয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে যোগাযোগ করা প্রমাণ করে, প্রস্তাবিত বিষয়গুলোর বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। যদিও বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৪০ হাজার সেনা রয়েছে।
এর আগে গেল শুক্রবার সন্ধ্যায় হিজবুল্লাহর উপর আক্রমণের ঠিক আগ মূহুর্তে হোয়াইট হাউস থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনকে মধ্যপ্রাচ্যে প্রয়োজনমত মার্কিন বাহিনীর অবস্থান মজবুত করার জন্য প্রতিরক্ষা বাড়ানো এবং বাহিনীর সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি মার্কিন স্বার্থ রক্ষা করতে নির্দেশ জারি করেন।
শুক্রবার হোয়াইট হাউস থেকে প্রকাশিত উক্ত বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাইডেন জাতীয় নিরাপত্তা দলের সাথে মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে মার্কিন দূতাবাসগুলিকে রক্ষা করার জন্য সমস্ত উপযুক্ত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ জারি করেছেন।
ইরানের সতর্কবার্তা
অপরদিকে গত পরশু শুক্রবার, লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণ উপকণ্ঠে হিজবুল্লাহর কেন্দ্রীয় কমান্ডের সদর দফতর লক্ষ্য করে ইসরাইল কর্তৃক পরিচালিত হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যার অভিযানে ইরানের বিপ্লবী গার্ডের একজন কমান্ডারও নিহত হয় ।
যার প্রতিক্রিয়ায় গতকাল শনিবার, জাতিসংঘে ইরানের প্রতিনিধি আমির সাইদ আরফানি তার দেশের কূটনৈতিক সদর দফতর এবং প্রতিনিধিদের লক্ষ্যবস্তু করার ব্যাপারে ইসরায়েলকে সতর্ক করে বলেন, ইরান তার কূটনৈতিক সদর দপ্তর ও প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে কোনো আগ্রাসন বরদাশত করবে না। বরং তেহরান এ জাতীয় যেকোন হামলার জবাব দেবে।
তিনি আরও বলেন, ইরান আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে তার অন্তর্নিহিত অধিকার প্রয়োগ করতে এবং তার গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ও নিরাপত্তা স্বার্থ রক্ষার জন্য যেকোন ব্যবস্থা নিতে দ্বিধা করবে না।
এদিকে ইরানের সরকারী বার্তা সংস্থা আইআরএনএতে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে নাসরুল্লাহর হত্যার প্রতিক্রিয়ায় ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি পাঁচ দিনের শোক ঘোষণা করেছেন। এবং নাসরুল্লাহসহ তার সঙ্গীদের শাহাদাতের ব্যাপারে সমবেদনা জানিয়েছেন।
অন্যদিকে ইরানের রাষ্ট্রপতি মাসুদ পেজেশকিয়ান এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে মন্তব্য করে বলেন, ‘এই সন্ত্রাসী হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত যে নিউইয়র্ক থেকে এসেছিল এবং ওয়াশিংটন যে ইহুদিবাদীদের সাথে সম্পর্ক ত্যাগ করতে পারে না’ বিশ্ব তা ভুলবে না।
সূত্র : আল জাজিরা ও আনাতোলিয়া ওয়েবসাইট