যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজা। প্যারামেডিকদের তাঁবুর সামনে মানুষের চিৎকার, আহতদের আর্তনাদ, স্বজনহারানোর কান্না আর সিভিল ডিফেন্স কর্মীদের হাঁকডাক সবকিছু ছাপিয়ে সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকের ক্যামেরায় ধরা পড়ে একটি কান্নারত ছোট্ট মেয়ে। মেয়েটি বারবার লাশের সারির পাশে দাঁড়িয়ে থাকা নার্সদের কাছে ছুটে যাচ্ছিল। আর কান্নাজড়ানো কন্ঠে বারবার আঞ্চলিক আরবি ভাষায় বলছিল, ‘ইয়াম্মা ইয়াম্মা ওয়াল্লাহ মা বিকাদরি আইশু মিন দুনিক ইয়াম্মা, লাইছ ইয়ম্মা’। মেয়েটি বলছিল, না, মা না! আল্লাহর কসম আমি তোমাকে ছাড়া একটুকু বাঁচবো না। নার্সরা বারবার মেয়েটিকে সান্ত্বনা দিয়ে বোঝাচ্ছিল, ইনি তোমার মায়ের মত দেখতে কেউ। কিন্তু মেয়েটি বারবার বলছিল ইনিই আমার মা। মেয়েটিকে নিবৃত করতে না পেরে শেষে মেয়েটির কাছে নতি স্বীকার করে নার্সরা।
আপনারা কি জানেন মেয়েটি তার মাকে কিভাবে শনাক্ত করেছিল? বোমার আঘাতে অক্ষত থাকা মাত্র কয়েকটি চুল দেখে। শুধু আমি আপনি নই, খোদ নার্সদের কাছেও প্রথমে মেয়েটির বর্ণনা অবিশ্বাস্য মনে হয়েছিল।
আপনারা কি জানেন মেয়েটি তার মাকে কিভাবে শনাক্ত করেছিল? বোমার আঘাতে অক্ষত থাকা মাত্র কয়েকটি চুল দেখে। শুধু আমি আপনি নই, খোদ নার্সদের কাছেও প্রথমে মেয়েটির বর্ণনা অবিশ্বাস্য মনে হয়েছিল। কিন্তু সেই চুল তো তার মায়ের। সেই চুলতো মেয়েটির শৈশবের সবচেয়ে আনন্দদায়ক স্মৃতি। তার পরম অধিকারের আদুরে খেলনা সেটি। সে কিভাবে এই চুল ভুলতে পারে?
২০২৩ সালের ২২ শে অক্টোবর সামাজিক মাধ্যমে এই ঘটনাটির ভিডিও ক্লিপ সামাজিক মধ্যমে ঝড় তোলে। পৃথিবীতে সন্তান আর মায়ের দৃঢ় বন্ধন নিয়ে ভালোবাসা আবেগে কবি লিখেছে হাজারো কবিতা। গল্পকার লিখেছে অজস্র কাহিনী। কিন্তু ২২শে অক্টোবরের এই ভিডিও ক্লিপ ছিল গল্পের চেয়েও বেশি। একটি শিশু পৃথিবীতে আসার পর সবার আগে সবচেয়ে বেশি পরিচিত হয় তার মায়ের সাথে। পৃথিবীর প্রতিটি শিশুই আপন মায়ের মুখ বা ছবি দেখে কিংবা কন্ঠস্বর শুনে চিনতে পারে। কিন্তু গাজার শিশুরা তাদের মায়েদের চেনে ভিন্নভাবে। কারণ, তারা হচ্ছে সত্যিকার পাথরশিশু।
সূত্র: আল জাজিরা