১।
শীতল নভেম্বরের এক সন্ধ্যা। গাজা উপত্যকার নাসর নামের এক হাসপাতালে শুয়ে ছিল একটি জীর্ণ শরীর। শরীরটি চোখ মেলে পৃথিবীর আলো দেখার আগেই পৃথিবীর নিষ্ঠুরতার শিকার একটি নিরীহ নবজাতক শিশু।
চারদিকে যুদ্ধের ছায়া। বন্দুকের শব্দ। কিন্তু এত বিপদের মাঝেও শিশুটির মা-বাবা আপন সন্তানকে সুস্থ করে বাড়ি(?) নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছিল। হঠাৎ হাসপাতালে মানুষের ছোটাছুটি বেড়ে গেল। দিগ্বিদিগ পালাতে লাগল মানুষ। আইসিইউ ওয়ার্ডের দরজায় কড়া সামরিক উর্দি পরা কিছু মানুষের উপস্থিতিতে অজানা শঙ্কায় কেঁপে উঠল শিশুটির বাবা-মা।
উর্দি পরিহিত লোকগুলোকে এগিয়ে আসতে দেখে এক মিথ্যা বিশ্বাসে অন্যদের মতই নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটতে শুরু করল শিশুটির বাবা-মা। কিন্তু পরক্ষণেই শিশুটির বাবা-মা ছুটতে শুরু করল আইসিইউর দিকে। কারণ, তাদের মনে হয়েছিল মিথ্যা বিশ্বাস করতে নেই। কিন্তু ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গেছে। উর্দিধারীরা হাসপাতালে ডাক্তার, নার্স, রোগী— কাউকেই থাকতে দেয়নি। হাসপাতালে তবুও কিছু মানুষ রয়ে গিয়েছিল। যারা পৃথিবীতে এসেছিল কেবলই।
২।
চারদিন পর। হাসপাতাল খালি। উর্দিধারীরা নতুন কিছু ধ্বংসের লক্ষ্যে কোথাও চলে গিয়েছে। পৃথিবীতে সদ্য আসা মানুষগুলোর জন্য আকাশ ভারী করে কাঁদছে কিছু মানুষ। কারণ, সদ্য চলে যাওয়া মানুষগুলোকে তারাই ডেকে এনেছিল এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে।
গাজার নাসর হাসপাতালের আইসিইউতে দুটি ছবি পাশাপাশি বসে আছে। নবজাতকের লাশের পাশে অশ্রু শুকিয়ে যাওয়া নিশ্চল বাবা-মা। আকাশ নীরবে তাদের দেখছে। আর আকাশে থাকা পাপের ফেরেশতারা একের পর এক ইসরায়েলের পাপের খাতা ভরাট করে চলছে।
কল্পনার মিশেলে লেখা এই ঘটনা গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের অন্যতম হৃদয়বিদারক সত্য ঘটনা। বেশ কিছুদিন আগে নাসর হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে ধুকতে থাকা ৩৯টি শিশুকে এভাবেই টানা ৪ দিন ক্ষুধায় তিলে তিলে কষ্ট দিয়ে হত্যা করে দখলদার ইসরায়েল।