নিউজনেস্ট

শীর্ষ ৭০ আওয়ামী নেতাদের হাতে হরিলুট দেশের হাজার কোটি টাকা

শীর্ষ ৭০ আওয়ামী নেতাদের হাতে হরিলুট দেশের হাজার কোটি টাকা
শীর্ষ ৭০ আওয়ামী নেতাদের হাতে হরিলুট দেশের হাজার কোটি টাকা। ছবি: নিউজনেস্ট

গত ১৫ বছরে ক্ষমতার সুযোগ নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের একাধিক মন্ত্রী, এমপি এবং শীর্ষস্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ব্যাপক দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিদেশে বিপুল সম্পদ পাচার করেছেন তারা। দুদকের তদন্তে এ পর্যন্ত অন্তত ৭০ জন মন্ত্রী-এমপি, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী ব্যক্তিত্বের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

অর্থ পাচারের গন্তব্য ও পরিবর্তন

দুদক সূত্রে জানা গেছে, আগে অর্থ পাচারের জন্য সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মালয়েশিয়া ছিল প্রধান গন্তব্য। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মধ্যপ্রাচ্যের দুবাই, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং পূর্ব ইউরোপের কিছু দেশ নতুন অর্থ পাচারের নিরাপদ স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিশেষ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই অর্থ পাচারের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।

দুদকের অনুসন্ধানে অভিযুক্তদের তালিকা

দুদক যে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে, তাতে উঠে এসেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানসহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালীর নাম। এ তালিকায় রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী প্রমুখ। এছাড়া এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলম মাসুদ এবং পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ রাফাতের নামও উল্লেখযোগ্য।

এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে এক লাখ কোটি টাকার বেশি পাচারের অভিযোগ রয়েছে। অপরদিকে সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা পাচারের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়েছে দুদক। চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের বিরুদ্ধে ৮০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ রয়েছে। যা তাকে আর্থিক খাত থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরপরই ছাত্র ও সাধারণ জনগণের আন্দোলনের ফলে দুদক ব্যাপক তদন্ত শুরু করে। দুদকের তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে ৮৩ জন মন্ত্রী-এমপি এবং শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্তের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৫০ জন মন্ত্রী ও এমপির বিরুদ্ধে বিদেশে অবৈধ সম্পদ রাখার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

দুদক জানিয়েছে, তারা ইতোমধ্যে বিদেশে পাচার করা সম্পদের তথ্য সংগ্রহের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চেয়ে এমএলএআর তথা মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসট্যান্স রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছে। বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বিএফআইইউকে প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দুর্নীতির কারণে যে বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে, তা ফেরত আনার পাশাপাশি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।

ডেস্ক রিপোর্ট
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত