মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন ঘোষণা করেছে, তারা ইসরায়েলে দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থাড (thaad) মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে। সেই সাথে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনার জন্য মার্কিন সামরিক সদস্যদের একটি দলও ইসরায়েলে অবস্থান করবে। আজ ১৪ই অক্টোবর রবিবার পেন্টাগনের প্রেস ব্রিফিংয়ে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই পদক্ষেপ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশ এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লয়েড অস্টিনের অনুমোদনে গৃহীত হয়েছে।
প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ
পেন্টাগন জানিয়েছে, ইরানের সাম্প্রতিক আক্রমণের পর ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করার লক্ষ্যে থাড ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পেন্টাগনের ভাষায়, এই পদক্ষেপটি ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ় প্রতিশ্রুতিকে প্রতিফলিত করে এবং এই ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলে থাকা মার্কিন নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।
তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ইসরায়েলে থাড প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন এবারই প্রথম নয়। ২০১৯ সালেও প্রশিক্ষণ এবং আকাশ প্রতিরক্ষার অনুশীলনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করেছিল। এবার পেন্টাগন থাড মোতায়েনের সময়সীমা প্রকাশ না করলেও, আমেরিকান সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে প্রায় ১০০জন সামরিক কর্মী ইসরায়েলে পাঠানো হবে এই ব্যবস্থা পরিচালনা ও তদারকির জন্য।
আরও পড়ুন: সুদানে ভয়াবহ বিমান হামলায় ২৩জন নিহত
থাড প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কার্যকারিতা
মার্কিন কোম্পানি লকহিড মার্টিন দ্বারা নির্মিত থাড ব্যবস্থা সংক্ষিপ্ত ও মাঝারি-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে সক্ষম। এটি উচ্চতর উচ্চতায় লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে এবং প্যাট্রিয়ট ব্যবস্থার সাথে কার্যকরভাবে কাজ করে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই ব্যবস্থা ১৫০ থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরত্বের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম, যা ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ইরান হামাসের সাবেক প্রধান ইসমাইল হানিয়া এবং হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে ইসরায়েলের উপর ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। হামলার ফলে ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং অনেক ইসরায়েলি নাগরিক আশ্রয়কেন্দ্রে সরে যেতে বাধ্য হয়েছে।
অন্যদিকে হামলার বৈধতা দেখিয়ে ইরান জানিয়েছে, এই প্রতিশোধমূলক আক্রমণ জাতিসংঘের চার্টারের ৫১ নম্বর ধারার অধীনে আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করে পরিচালিত হয়েছে।
ভবিষ্যত সংঘাতের সম্ভাবনা
ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং অন্যান্য সামরিক ও রাজনৈতিক নেতারা তেহরানের বিরুদ্ধে বড় ধরনের আক্রমণের ঘোষণা দিয়েছেন। কিছু নেতা ইরানের পারমাণবিক এবং তেল স্থাপনাগুলোতে আক্রমণ চালানোরও প্রস্তাব দিয়েছেন। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় আবার ইরান হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসরায়েল যদি পাল্টা হামলা চালায় তবে ইরান ইসরায়েলের অবকাঠামোতে ব্যাপক আঘাত হানবে।
সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস, আনাদোলু এজেন্সি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link